নয়া দিল্লি: একে করোনায় রক্ষে নেই, সুগ্রীব হিসেবে জুটেছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস(Black Fungus)! দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এই ছত্রাক সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই রাজস্থান সরকারের তরফে এই সংক্রমণকে “মহামারী” বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কীভাবে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিহ্নিত করা যাবে, তার চিকিৎসাই বা কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করল এইমস(AIIMS)।
ধীরে ধীরে দেশ জুড়ে জাঁকিয়ে বসছে মিউকরমাইকোসিস(Mucormycosis)। মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে এই সংক্রমণে, রাজস্থানে ১০০-রও বেশি করোনা রোগীর দেহে এই ছত্রাক সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। দিল্লি সহ একাধিক রাজ্যে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ। দিল্লির এইমসের তরফে কোন রোগীদের সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি, কীভাবে এই ছত্রাক সংক্রমণ চিহ্নিতকরণ সম্ভব এবং চিকিৎসার জন্য কী কী পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত, তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
১. যে সমস্ত রোগীদের দেহে মধুমেহ অনিয়ন্ত্রিত, কিংবা স্টেরয়েড প্রয়োগ করা হয়, তাঁদের মিউকরমাইকোসিসের সম্ভাবনা বেশি।
২. যে সকল রোগীর ক্যানসার বা জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী কোনও রোগের চিকিৎসা চলছে, তাঁদের দেহেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বাসা বাঁধতে পারে।
৩. যে সকল করোনা রোগীর সংক্রমণ অত্যন্ত জটিল স্তরে পৌঁছে গিয়েছে, যাঁরা মাস্ক বা নাসাল ক্যানেলের মাধ্যমে অক্সিজেন সাপোর্ট বা ভেন্টিলেটরে রয়েছেন, তাঁদের দেহেও মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে পারে।
৪. যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন, তাঁদেরও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হতে পারে।
এইমসের চিকিৎসকরা এই সংক্রমণ দ্রুত নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসকদের, বিশেষ করে অপথ্যাল্মোজিস্ট বা চোখের চিকিৎসকদের নিয়মিত রোগীকে যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও যাতে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে চেক আপ করানো হয়, তার পরামর্শ দিয়েছে এইমস।
১. নাক থেকে অস্বাভাবিক রকমের কালো তরল বা রক্ত বের হওয়া, কিংবা নাকের উপর কালো শক্ত ভাব।
২. নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথা বা চোখ ব্যাথা, চোখের চারপাশে ফোলা ভাব, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, অস্পষ্ট দেখা বা কিছুই দেখতে না পাওয়া, চোখ খুলতে না পারা।
৩. মুখে অসাড়বোধ বা অদ্ভুত শিরশিরানি অনুভব।
৪. মুখ খুলতে বা খাবার চেবাতে অসুবিধা।
৫. দাঁত পরে যাওয়া, মুখের ভিতর, দাঁতের আশেপাশে ফুলে যাওয়া বা কালো ছোপ সৃষ্টি।
এ ক্ষেত্রে রোগীর নিজেরই প্রতিদিন পরীক্ষা করা উচিত বলে মনে করছেন এইমস-র চিকিৎসকেরা। দিনের আলোয় মুখের কোথাও ফুলেছে কিনা, বিশেষত নাক, গাল বা চোখের পাশে, কালো দাগের সৃষ্টি, মুখের কোথাও হাত দিলে শক্ত অনুভব বা ব্যথা হলেই চিকিৎসককে জানানো উচিত।
১. যদি উপরোক্ত কোনও উপসর্গ দেখা যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে ইএনটি চিকিৎসক, চোখের চিকিৎসক বা যে চিকিৎসকের অধীনে এতদিন করোনার চিকিৎসা চলেছে, তাঁকে জানানো প্রয়োজন।
২. নিয়মিত চিকিৎসা ও ফলো-আপ রাখা। মধুমেহ অত্যন্ত কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ।
৩. কো-মর্ডিবিটি থাকলে, সেই রোগগুলির জন্য নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধ সেবন।
৪. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।
৮. নিজে থেকে কোনও স্টেরয়েড বা অ্যান্টি বায়োটিক কিংবা অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ সেবন করবেন না।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন অপচয় রোখায় জোর প্রধানমন্ত্রীর, ‘সুপারফ্লপ মিটিং’ পাল্টা মমতার