মুম্বই: ওমিক্রনের (Omicron) আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছে বাণিজ্যনগরী। শুক্রবারই মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) নতুন করে সাতজন ওমিক্রনে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, এদের মধ্য়ে তিনজন মুম্বইয়ের বাসিন্দা। এই নিয়ে দেশে নয়া ভ্য়ারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩২-এ দাঁড়াল। ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার মাঝেই মুম্বই পুলিশের (Mumbai Police) তরফে আগামী দুই দিনের জন্য বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।
মুম্বই কমিশনারেটের অধীনে থাকা সমস্ত জায়গাতেই বড় জমায়েত, যেমন পথসভা বা বিক্ষোভ মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী দুই দিন যাতে মানুষ ও গাড়ির বড় জমায়েত না হয়, তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টা এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সম্প্রতি অমরাবতী, মালেগাঁও ও নান্দেদে যে হিংসা ছড়িয়েছিল, তার প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও কঠোর করার চিন্তা করা হয়েছে।”
শুক্রবারই মহারাষ্ট্রে নতুন করে সাতজন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলে। এদের মধ্য়ে সাড়ে তিন বছরের একটি শিশুকন্যাও রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন মুম্বইয়ের বাসিন্দা। ওই তিন যুবকের বয়স ৪৮, ২৫ ও ৩৭, সম্প্রতিই তারা তানজানিয়া, ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নাইরোবি থেকে ফিরেছে। মুম্বইয়ে নতুন করে তিনজন আক্রান্তের খোঁজ মেলায় বাণিজ্যনগরীতে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচে দাঁড়াল।
বৃহ্নমুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, তানজানিয়া থেকে আগত ৪৮ বছরের ওই ব্যক্তি ঘন জনবসতিপূর্ণ ধারাভি এলাকার বাসিন্দা। গত ৪ ডিসেম্বর তাঁর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। সেই সময় মৃদু উপসর্গ থাকলেও, বর্তমানে ওমিক্রনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির কোনও উপসর্গ নেই। বর্তমানে তাঁকে একান্তবাসে রাখা হয়েছে এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা দুইজনের করোনা পরীক্ষাও করা হয়েছে। দুজনেরই করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ওই ব্যক্তি এখনও অবধি করোনা টিকার একটিও ডোজ় নেননি বলেই জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, ২৫ বছর বয়সী যে যুবক ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি সম্প্রতিই লন্ডন থেকে ফিরেছেন। গত ১ ডিসেম্বর তাঁর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ওই যবুকের কোনও উপসর্গ নেই। করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই ওই যুবকের নেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
৩৭ বছরের গুজরাটের এক বাসিন্দাও গত ৪ ডিসেম্বর বিদেশ থেকে ফেরার পর বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করা হলে, তাঁর রিপোর্ট পজেটিভ আসে। বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির মৃদু উপসর্গ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বাকি চারজন নতুন আক্রান্তরা পুণে জেলার পিম্পরি চিনচওয়াদ পুরসভার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতিই নাইজেরিয়া ফেরত যে তিনজন মহিলা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের সংস্পর্শে এই চারজন এসেছিলেন। নতুন করে আক্রান্ত সাতজন রোগীর মধ্যে চারজন সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত। বাকি তিনজনের মধ্যে একজন করোনা টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছেন, একন কোনও ডোজ়ই নেননি। তৃতীয় আক্রান্ত সাড়ডে তিন বছরের এক শিশু হওয়ায়, তার টিকাকরণ সম্ভব নয়।