নয়া দিল্লি: উপত্যকায় বারবার জঙ্গিদের নিশানা হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিগত পাঁচদিনেই সাতজনকে খুন করেছে জঙ্গিরা (Terrorist Attack)। হঠাৎ এই জঙ্গি উপদ্রব ও তা দমনের জন্য শনিবারই জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা (Manoj Sinha)-র সঙ্গে কথা বলতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।
সরকারি সূত্রে খবর, বিগত ৫দিনে যে ৭ জন কাশ্মীরী নাগরিককে খুন করেছে জঙ্গিরা, তাদের মধ্য়ে অধিকাংশই হিন্দু বা শিখ। উপত্যকায় সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়গুলির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই কারণেই আজকের এই বৈঠকের আয়োজন করা হতে পারে। বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গি হানা কীভাবে বোঝা হয়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিক ও জম্মু-কাশ্মীরের শীর্ষ আধিকারিকরাও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবারও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি বৈঠকের তলব করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই বৈঠকে অমিত শাহকে কীভাবে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষদের উপর হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা এবং নিরাপত্তা কঠোর করতে কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়া হয়। ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আধাকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন নিরাপরাধ কাশ্মীরবাসীদের হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের যেন দ্রুত গ্রেফতার করা হয় এবং আগামিদিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করা।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই গোয়েন্দা বিভাগের এক শীর্ষকর্তাকে শ্রীনগরে পাঠানো হয়েছে জঙ্গি গতিবিধির উপর নজর রাখতে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কাজে সাহায্য করতে।
বৃহস্পতিবারই শ্রীনগরের একটি সরকারি স্কুলে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্য়াঙ্ক রেঞ্জ থেকে একজন মহিলা প্রধান শিক্ষক ও এক শিক্ষককে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। তার আগে মাখন লাল বানো নামক এক কাশ্মীরী পণ্ডিতকেও তাঁর ওষুধের দোকানে ঢুকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। এছাড়াও মঙ্গলবার বিহারের বাসিন্দা এক চাট বিক্রেতা বীরেন্দ্র পাসওয়ান ও মহম্মদ সাফি লোন নামক দুই ব্যক্তিকেও শ্রীনগর ও বান্দিপোরায় গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা।
বিগত ৫ দিনে যে ৭জনকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা, তাদের মধ্যে ৪জনই সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে এখনও অবধি মোট ২৮ জনকে খুন করেছে জঙ্গিরা। এদের মধ্যে ৫ জন হিন্দু বা শিখ সম্প্রদায়ের ছিলেন, ২জন হিন্দু পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, উপত্যকায় লাগাতার অভিযানে বহু সংখ্যক জঙ্গি ও তাদের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদেরও দমন করা হয়েছে। সেই ঘটনা থেকেই ক্ষোভে বদলা নিতে নিরস্ত্র পুলিশকর্মী বা সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। জানা গিয়েছে, যারা সদ্য জঙ্গি সংগঠনে নাম লিখিয়েছে, তাদেরই নানা প্রলোভন দেখিয়ে এই কাজ করানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: TMC VS Congress: জোর তরজা হাত-ঘাসফুলে! এবার তৃণমূলের নিশানায় ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী