গুয়াহাটি: সেনা কনভয়ে জঙ্গিহানা (Terrorist Attack)। সেনাবাহিনীর এক কর্নেল(Colonel)-র পরিবার ও তিন সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিগত কয়েক দশকে মণিপুরে (Manipur) এটিই সবথেকে ভয়াবহ হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ মণিপুরের চূড়াচন্দপুরে সেনাবাহিনীর কনভয়ে আচমকাই হামলা চালায় জঙ্গিরা। মায়ানমার সীমান্তের কাছে একটি জায়গায় সেনাবাহিনীর উপর ওই হামলা চলেছে বলে জানা গিয়েছে। অসম রাইফেল বাহিনীর (Assam Rifle Force) কনভয়টি যাওয়ার সময়ই অজ্ঞাত পরিচয় একদল দুষ্কৃতী হামলা চালায়।
সেনা বাহিনীর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই কনভয়ে সেনাবাহিনীর এক কর্নেল ও তার পরিবার ছিলেন। তাদের সঙ্গে কুইক রিয়াকশন টিম(Quick Reaction Team)-র কয়েকজন সদস্যও ছিলেন। বিস্ফোরণে কর্নেল, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে চার সেনাবাহিনীর সদস্যেরও মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Strongly condemn the cowardly attack on a convoy of 46 AR which has reportedly killed few personnel including the CO & his family at CCpur today. The State forces & Para military are already on their job to track down the militants. The perpetrators will be brought to justice.
— N.Biren Singh (@NBirenSingh) November 13, 2021
এখনও কোনও গোষ্ঠী হামলার দায়স্বীকার না করলেও মণিপুরের পিপলস লিবারেশন আর্মি (People’s Liberation Army)-ই এই হামলার সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। ইম্ফল থেকে ১০০ কিলোমিটার ভিতরে একটি প্রত্যন্ত গ্রামের কাছে হামলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জঙ্গলে ঘেরা ওই জায়গাটি মায়ানমার সীমানার কাছেই অবস্থিত হওয়ায় হামলাকারীরা সহজেই সীমান্ত পার করে পালিয়ে যেকে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং (Biren Singh) হামলার কথা স্বীকার করে নেন এবং গোটা ঘটনার সমালোচনা করেন। জঙ্গিদের ধরতে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান। মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে লেখেন, “৪৬ এআর বাহিনীর কনভয়ের উপর যে ঘৃণ্য হামলা চালানো হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ করছি। জঙ্গি হামলায় কর্নেল ও তার পরিবার সহ বেশ কয়েকজন সেনাবাহিনীর জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের পুলিশ বাহিনী ও প্যারা মিলিটারি বাহিনী ইতিমধ্যেই জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হামলার সমালোচনা করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও।
সেনাবাহিনীর উপর এর আগেও হামলা হলেও সেনাবাহিনীর পরিবারের উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠী অধ্যুষিত ওই প্রত্যন্ত জায়গায় কর্নেল তাঁর পরিবারকে নিয়ে কেন গিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে সেনাবাহিনীর তরফে এখনও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। চুপ রয়েছে অসম রাইফেল বাহিনীও।
বিগত কয়েক দশক ধরেই উত্তর-পূরেবের রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সীমান্ত পার করেও বহু যুবক এই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিচ্ছে। এ দিকে, শত্রু দেশ পাকিস্তান ও চিনের বিরুদ্ধে এই ছোটখাটো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এর আগে ২০১৫ সালে মণিপুরে জঙ্গিহামলায় ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল।