মুম্বই: আরিয়ান খান-কাণ্ডে এবার আরও এক নয়া মোড়। সুনীল পাটিলকে এই মাদক-কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বলে উল্লেখ করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, এনসিপি-ঘনিষ্ঠ এই সুনীলই এই কাণ্ডে মূল চক্রী। বিজেপি-কে বদনাম করার জন্য সুনীল পাটিলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এনসিপি নেতারা।
শনিবার মহারাষ্ট্র বিজেপির নেতা মোহিত কাম্বোজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, বিজেপিকে বদনাম করতেই এ ভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সুনীল পাটিলকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীরা সেই ষড়যন্ত্র করছে। সেই সব মন্ত্রীদের জবাবদিহি করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজ্যের বেশ কয়েক জন মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মোহিত। তাঁর দাবি, মন্ত্রীরা মাদক মাফিয়াদের সমর্থন করছেন। এক জন আধিকারিককে নিশানা করতে চাওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্যেরই এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে দাউদ ইব্রাহিম ঘনিষ্ঠ মাদক মাফিয়ার সঙ্গে দেখা গিয়েছিল বলেও দাবি মোহিতের।
মোহিত আরও বলেন, আরিয়ান-কাণ্ডে মূল নিয়ন্ত্রক এবং চক্রী সুনীল পাটিলই। গত ২০ বছর ধরে এনসিপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলেও দাবি জানান তিনি। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী অনিল দেশমুখের ছেলে হৃষিকেশ দেশমুখের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার দাবিও করেছে বিজেপি। সরকারি দফতরে কাকে কোথায় বদলি করা হবে, সেটাও নাকি সুনীলেরই হাতে।
বিজেপির নেতার আরও অভিযোগ, এই মামলার অন্যতম সাক্ষী কিরণ গোসাভিও সুনীলেরই লোক। এটা বিজেপি-র বিরুদ্ধে একটা বড় ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, সুনীলের সঙ্গে তাঁদের কী সম্পর্ক, তা স্পষ্ট করতে হবে এনসিপি নেতাদের।
ইতিমধ্যেই, আরিয়ান খান মাদক মামলা থেকে সরানো হয়েছে এনসিবির তদন্তকারী সমীর ওয়াংখেড়েকে। তাঁর বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকার ঘুষ দেওয়া এবং তোলাবাজির অভিযোগ উঠছিল। তদন্তও শুরু হয়েছিল এনসিবি আধিকারিকের বিরুদ্ধে। আর তারপর আজ আরিয়ান খান মাদক মামলার তদন্তকারী দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হল সমীর ওয়াংখেড়েকে।
এখন আরিয়ান খান মাদক মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে একটি বিশেষ তদন্তকারী দলকে, যার নেতৃত্বে থাকবেন অভিজ্ঞ পুলিশ আধিকারিক সঞ্জয় সিং। শুধু আরিয়ান খান সংক্রান্ত মামলাই নয়, এর পাশাপাশি সমীর ওয়াংখেড়ে আরও যে চারটি মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন, সেই সব মামলাগুলিরও দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে সমীরকে। বদলে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সঞ্জয় সিংকে।
মুম্বইয়ে ওই প্রমোদতরীতে তল্লাশি অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর জ়োনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে। শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খানের গ্রেফতারির পর রাতারাতি জনতার চোখে হিরো হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তাঁর বিরুদ্ধেই উঠছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের সঙ্গেও বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই সমীরের বিরুদ্ধে ফোন ট্যাপ করা, তোলাবাজি এবং ভুয়ো উপজাতি সার্টিফিকেট দেখিয়ে আসন সংরক্ষণ করার অভিযোগ এনেছেন নবাব মালিক।