Nitish Kumar : বিহারে হারিয়েছে একার রাজ, বিষ মদ কাণ্ডে শরিক বিজেপির চাপে কোনঠাসা নীতীশ
Spurious Liquor: নীতীশের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়ে বিহার বিজেপির সভাপতির বক্তব্য, পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া রাজ্যে বেআইনি মদ বিক্রি করা সম্ভব নয়।
পটনা : বিষ মদ খেয়ে একের পর এক মৃত্যু বিহারে। আর তার পর থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, বিহারে মদ নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে এভাবে দেদার মদ বিক্রি হচ্ছে সেখানে? প্রশ্ন উঠছিল পুলিশি নজরদারি নিয়েও। আর এরই মধ্যে নীতীশকে আরও কোনঠাসা করে দিয়েছে তাঁরই জোটসঙ্গী বিজেপি। এখন বিজেপি নেতৃত্বও দাবি তুলছে, বিহারের মদ নিষিদ্ধ করার নীতিতে কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে, তা নিয়ে পর্যালোচনায় বসা হোক।
আজ এক সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন বিহারের বিজেপি সভাপতি তথা লোকসভা সাংসদ সঞ্জয় জয়সওয়াল এই পর্যালোচনায় বসার ‘পরামর্শ’ দেন নীতীশের সরকারকে। নীতীশের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়ে তাঁর বক্তব্য, পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া রাজ্যে বেআইনি মদ বিক্রি করা সম্ভব নয়।
সঞ্জয় জয়সওয়াল বলেন,”অবশ্যই এই নীতি পর্যালোচনা করার প্রয়োজন আছে। এই ঘটনাকে শুধু মদ নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত করা ঠিক হবে না। কিন্তু বেশ কিছু জায়গায় প্রশাসনের ভূমিকা যথেষ্ট সন্দেহজনক, এবং বিহার সরকারকে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তাতেই পূর্ব চম্পারণে মদের ব্যবসা চলছে।
উল্লেখ্য, বিগত তিন দিনে বিহারে বিষমদ খেয়ে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর এই ঘটনাগুলি কেবলমাত্র একটি এলাকা নয়। মুজফ্ফরপুর, গোপালগঞ্জ, বেতিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন, যারা এই বিষ মদ কাণ্ডের জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে বিহারজুলে মদ্যপান বিরোধী প্রচার অভিযান শুরু করার কথাও বলেন তিনি।
এই বিষ মদ কাণ্ডের পর নীতীশ কুমার গতকাল বলেছিলেন, “আপনি যদি খারাপ জিনিস পান করেন, তাহলে আপনি মারা যাবেন।” আর এই মন্তব্যেই প্রচুর সমালোচনা করেছিল বিরোধীরা। আরজেডি প্রধান তথা বিহার বিধানসভা বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব অভিযোগ জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী ঘটনায় দায় নেওয়া কিংবা মদ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে বিহারবাসীকে ভয় দেখাচ্ছেন।
২০১৬ সালে বিহারে মদ্যপানের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তা নীতীশ কুমারের আমলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে একটি। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে মদের জন্য ব্যয় করা অর্থ পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করা যেতে পারে। নীতিটি প্রাথমিকভাবে তাঁকে ভোটবাক্সে প্রচুর সুবিধা দিয়েছিল। বিশেষ করে বিহারে জাত-পাতের সীমানা পেরিয়ে তাঁর এই নীতি বিহারের মহিলাদের কাছে প্রচুর সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বিহারে এই মদ নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়ার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক ফাঁক থেকে গিয়েছিল। আর সেই কারণে মদ মাফিয়াদের উত্থান হয়েছে।
আরও পড়ুন : Delhi Air Pollution : সিগারেটের ধোঁয়ার থেকেও ক্ষতিকর রাজধানীর বাতাস, কমছে দিল্লিবাসীর আয়ু