Delhi Air Pollution : সিগারেটের ধোঁয়ার থেকেও ক্ষতিকর রাজধানীর বাতাস, কমছে দিল্লিবাসীর আয়ু
Air Quality Index of National Capital: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিল্লিবাসীদের আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এর কারণ বিশদে জানা না গেলেও দূষণ অবশ্যই আয়ু কমার একটি বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
নয়া দিল্লি : বিষিয়ে উঠছে রাজধানীর বাতাস। রাস্তা বেরোলেই গলা-চোখ জ্বালা করছে। রাজধানীতে দীপাবলি পরবর্তী সময়ে বাতাসের গুণগত মান শেষ পাঁচ বছরের সর্বনিকৃষ্ট। এবার আরও ভয়ের খবর শোনালেন দিল্লি এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। জানালেন, সিগারেটের ধোঁয়ার থেকেও বেশি ক্ষতিকর দিল্লির বাতাস। আর দিল্লির এই দূষণের জন্য কমছে রাজধানীবাসীর আয়ু।
রণদীপ গুলেরিয়া আজ বলেন, “গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিল্লিবাসীদের আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এর কারণ বিশদে জানা না গেলেও দূষণ অবশ্যই আয়ু কমার একটি বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। দিল্লিবাসীদের ফুসফুস কালো হয়ে গিয়েছে।”
সম্প্রতি ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ দাবি করছে, দিল্লির দূষণের উপর বাজি ফাটানোর খুব বেশি প্রভাব পড়ে না। এই প্রসঙ্গে দিল্লি এইমসের প্রধানের বক্তব্য, “ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিতে দূষণ খুব বেশি। দীপাবলিতে বাজি ফাটানোও এতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।” এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “উৎসবের সময় রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল অনেকটা বেড়ে যায়, যা দূষণের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়।”
গুলেরিয়া আরও বলেন যে দূষিত এলাকায় কোভিড আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে। তিনি বলেন, “রোগীদের ফুসফুসে ফোলা ফোলা ভাব বেড়ে যেতে পারে। করোনা বাতাসে মিশে থাকা দূষকগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আরও সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে।”
এ দিন সকালে দিল্লির বাতাসের গুণমান আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভোর ৬টা নাগাদ বাতাসের গুণগত মানের হার ছিল ৫৩৩, যার ফলে “অতি ভয়ঙ্কর” পর্যায়ে পৌঁছেছে দিল্লির বাতাস। পার্শ্ববর্তী নয়ডা, গুরুগ্রাম, গাজিয়াবাদ ও গ্রেটার নয়ডায় বাতাসের গুণমান আরও খারাপ বলেই জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া ও বায়ুর গুণমান পূর্বাভাস ও গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ৭ নভেম্বরের বিকেল থেকে দিল্লির আকাশ কিছুটা হলেও পরিষ্কার হবে। তবে বাতাসের গুণমান খারাপ পর্যায়েই থাকবে।
দীপাবলির রাতে বাজি ফাটানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল রাজধানীতে। কিন্তু সে সব নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অনেকেই বাজি ফাটিয়েছেন। আর তার সঙ্গে ফসলের গোড়ার অংশ পোড়ানোর সমস্যা তো রয়েছেই।
দিল্লিবাসীদের অনেকেই দীপাবলির রাত থেকেই গলা ও চোখ জ্বালা অনুভব করেছেন বলে জানিয়েছেন। বিশেষ করে দিল্লি সংলগ্ন এলাকাগুলিতে পরিস্থিতি ছিল ভয়ঙ্কর। ফরিদাবাদে বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ৪৬৯, গ্রেটার নয়ডায় বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ৪৬৪, গাজিয়াবাদে এই সূচক ছিল ৪৭০, গুরগাঁওয়ে এই সূচক ছিল ৪৭২ এবং নয়ডায় বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ৪৭৫।
ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তারা যেন বাড়িতেই থাকেন। রাজধানীর দূষণ কমাতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল যে জোড়-বিজোড় পদ্ধতি এনেছিলেন, তা ফিরিয়ে আনা হবে কিনা, তা নিয়েও আলোচনা শুরু করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন, শীতের শুরু হয়ে যাওয়ায়, তাপমাত্রা কম থাকায় এবং বাতাসের চলাচল কম হওয়ায় বিষাক্ত কণা বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছিই অবস্থান করছে। সেই কারণেই কুয়াশার সঙ্গে দূষিত কণা মিশ্রিত হয়ে ঘন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।