পারাদ্বীপ (ওড়িশা): ওড়িশার জগৎসিংহপুর জেলার ধিনকিয়ায় জেএসডব্লিউ (JSW) গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত কারখানা ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রে তৈরি হয়েছিল শুক্রবার। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ৪০ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও বৃদ্ধও রয়েছেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এদিকে পুলিশের বক্তব্য, গ্রামবাসীরা পুলিশকর্মীদের উপর চড়াও হওয়ায়, পাঁচ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।
প্রায় এক দশক আগে ধিনকিয়া গ্রামে দক্ষিণ কোরিয়ার ইস্পাত কোম্পানি পোস্কোর কারখানা তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। সম্প্রতি জেএসডব্লিউ গোষ্ঠীকে তাদের ৫৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন গ্রাম থেকে জমি বরাদ্দ করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। আর এই নিয়েই ধিনকিয়ায় ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। ধিনকিয়ার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, গ্রামবাসীরা তাদের পানের বাগান পরিচর্যার জন্য দেখতে গেলে নিকটবর্তী পাটানা গ্রামে যাওয়ার পথে মহলায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। রাজ্য সরকার ওই পানের বাগান ভেঙে ফেলেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
#WATCH | Jagatsinghpur, Odisha | Police baton-charged people in the Dhinkia village who were allegedly protesting over the proposed steel plant site in the district, today pic.twitter.com/fPQGBRMgDm
— ANI (@ANI) January 14, 2022
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ধিনকিয়ার কিছু অংশকে পৃথক করে মহলা গ্রাম তৈরি করেছে প্রশাসন। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করেও গত মাসে অন্তত দু’বার পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য দেবেন্দ্র সাওয়াইনের বক্তব্য, “পুলিশ আমাদের পানের বাগানে যেতে বাধা দিয়েছিল। গ্রামবাসীরা যখন বলে, তাদের বাগানে যেতে হবে, তখনই পুলিশ কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়াই লাঠিচার্জ শুরু করে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আটজন ছিল ৯-১১ বছর বয়সী শিশু এবং ১১ জনের বয়স ষাট বছরের বেশি। সাওয়াইনের অভিযোগ, এমনকী আহত ব্যক্তিদেরও পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। যদিও, জগৎসিংহপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ্বর সিং অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ সুপারের পাল্টা বক্তব্য, “গ্রামবাসীরা পুলিশকর্মীদের উপর আক্রমণ করেছিল। আমাদের কর্মীরা দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং পরবর্তী সময়ে একেবার সামান্য শক্তি ব্যবহার করেছিল। সংঘর্ষে, প্রায় পাঁচজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।”
স্থানীয় তহসিলদার পি এন দাস সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের বক্তব্য, গ্রামবাসীরা পানের বাগান অধিগ্রহণের জন্য সম্মতি দেওয়ার পরই, প্রশাসন সেগুলি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে কোনও বেআইনি কিছু নেই বলেই দাবি করেন স্থানীয় তহসিলদার। এদিকে পুলিশকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : PM Modi: কোন পথে ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি! ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে আজ ভাষণ মোদীর