পুলিশের চাকরি ছেড়েছেন, ৪৪ বার জেল খেটেছেন, সবই কৃষক আন্দোলনের জন্য

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Jan 30, 2021 | 12:16 PM

কৃষকদের প্রতি সহমর্মিতা ও আন্দোলনের অদ্যম শক্তি উত্তরাধিকার সূত্রেই পেয়েছেন বিকেইউ নেতা রাকেশ তিকাইত। কারণ, ১৯৮৭ সালেও উত্তর প্রদেশে কৃষক আন্দোলনে উঠে এসেছিল এক তিকাইতের নাম। মহেন্দ্র সিং তিকাইত, তিনি হলেন রাকেশ তিকাইতের বাবা।

পুলিশের চাকরি ছেড়েছেন, ৪৪ বার জেল খেটেছেন, সবই কৃষক আন্দোলনের জন্য
ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত। ছবি:ANI

Follow Us

নয়া দিল্লি: কৃষক আন্দোলনের শুরু থেকেই বিভিন্ন সময়ে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশ সরকারের নির্দেশিকা পেয়ে সীমান্ত খালি করতে শুরু করেছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। তাঁর কান্নাভেজা আবেদনই কৃষকদের ফের আন্দোলনমুখী করেছে। তিনি হলেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত (Rakesh Tikait)। তবে এই প্রথম নয়, আজীবনই তিনি কৃষকদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন, কমপক্ষে ৪৪ বার জেল খেটেছেন তিনি।

প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্রাক্টর মিছিলে বিশৃঙ্খলা ও লালকেল্লায় ভাঙচুরের ঘটনায় যে ৩৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাতে নাম রয়েছে রাকেশ তিকাইতেরও। “প্রয়োজনে আত্মহত্যা করবেন, তবুও আন্দোলন ছেড়ে যাবেন না”, স্পষ্টভাবে সে কথা বলেছেন তিনি। তবুও আন্দোলনকারীদের একাংশ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলে রাতে সংবাদ মাধ্যমের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, “ওরা কৃষকদের লাঠি দিয়ে আঘাত করল। আমাদের কৃষকদের মেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবুও কিছুতেই পিছু হটব না।” এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ফের আন্দোলনস্থলে ফিরতে শুরু করেন কৃষকরা।

তবে কেবল কৃষি আইন নিয়েই নয়, এর আগেও কৃষকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। মধ্য প্রদেশে জমি অধিগ্রহণ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেও শীর্ষনেতা ছিলেন তিনি। সেইসময় ৩৯ দিন জেলে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে আখের দাম বৃদ্ধিতে দিল্লির সংসদের বাইরে বিক্ষোভ করায় তিহাড় জেলেও ছিলেন রাকেশ তিকাইত। রাজস্থানে কৃষকদের দাবিতে সরব হয়েও জয়পুরের জেলে দিন কাটিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: উত্তপ্ত সিংঘু সীমান্ত, কৃষকদের তরোয়ালের ঘায়ে আহত পুলিশকর্মী

কৃষকদের প্রতি সহমর্মিতা ও আন্দোলনের অদ্যম শক্তি উত্তরাধিকার সূত্রেই পেয়েছেন বিকেইউ নেতা রাকেশ তিকাইত। কারণ, ১৯৮৭ সালেও উত্তর প্রদেশে কৃষক আন্দোলনে উঠে এসেছিল এক তিকাইতের নাম। মহেন্দ্র সিং তিকাইত, তিনি হলেন রাকেশ তিকাইতের বাবা। আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের গুলিতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়, সেই আন্দোলন থেকেই গড়ে ওঠে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন। এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন মহেন্দ্র সিং তিকাইত। তিনি কৃষকদের কাছে পরিচিত ছিলেন “মসিহা” হিসাবে।

আইনের ছাত্র রাকেশ ১৯৮৫ সালে দিল্লি পুলিসে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। কিন্তু ৯০-র দশকেই ছেড়ে দেন সেই চাকরি, বাবার সঙ্গে যোগ দেন লালকেল্লার সামনে হওয়া কৃষক আন্দোলনে। বাবার প্রয়াণের পরই বিকেইউ-র দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নেন রাকেশ, জাতীয় মুখপাত্রের পদে বসেন তিনি। প্রেসিডেন্টের পদ পান তাঁরই ভাই নরেশ তিকাইত।

একসময় দিল্লি পুলিশেই কর্মরত রাকেশ তিকাইত আজ সেই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধেই সরব। তাঁর দাবি, যতদিন না কেন্দ্র এই তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করছে, তাঁরা পিছু হটবেন না।

আরও পড়ুন: নকশাল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন পুলিশে, খুন করে জ্বালিয়ে দিল ভাই ও প্রাক্তন সঙ্গীরাই

Next Article