নয়া দিল্লি: বছর শেষে দেশ তথা গোটা বিশ্বই মুখোমুখি হয়েছে এক নতুন চ্যালেঞ্জের। লড়াই চালাতে হচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন(Omicron)-র বিরুদ্ধে। করোনার সংক্রমণ রুখতে ভ্যাকসিন(COVID Vaccine)-র উপরই আস্থা রাখা হলেও, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট একাধিকবার অভিযোজিত হয়ে তৈরি হওয়ায় করোনার টিকাকেও ফাঁকি দিতে সক্ষম বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৮৩ জন ওমিক্রন আক্রান্তদের নিয়ে একটি পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে যে ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত।
শুক্রবার এই পর্যালোচনার ফলাফল জানায় কেন্দ্র। মাস্ক পরা ও নজরদারির মাধ্যমে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙার কথা মনে করিয়ে দিয়ে একইসঙ্গে বলা হয়, “এই সংক্রমণ রুখতে কেবলমাত্র ভ্যাকসিনই পর্যাপ্ত নয়।”
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক(union Health Ministry)-র তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, ওমিক্রনে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত দেশে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। ১১৪ জন এখনও অবধি ওমিক্রনকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মূলত ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে এখনও অবধি ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ (Rajesh Bhushan) জানান, দেশের ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্য়ে ২৭ শতাংশের ভ্রমণের ইতিহাস নেই। সুতরাং গোষ্ঠী সংক্রমণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যে ১৮৩ জন ওমিক্রন আক্রান্তদের নিয়ে এই পর্যালোচনা চালানো হয়েছিল, তাতে দেখা গিয়েছে, ৮৭ জনই সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত। ৩ জন বুস্টার ডোজ়ও নিয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে কেবলমাত্র ৭ জন এখনও করোনা টিকা নেননি এবং ২ জন আংশিক টিকাপ্রাপ্ত। ৭৩ জনের টিকাকরণ সম্পর্কে কোনও তথ্য জানা যায়নি এখনও এবং ১৬ জন প্রাপ্তবয়সেক না হওয়ায় তাদের টিকাকরণ সম্ভব হয়নি।
কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান ডঃ ভিকে পালও ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনের অধিক সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, “যেভাবে প্রতিটি ঘরে ঘরে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে স্পষ্ট যে ডেল্টার তুলনায় অধিক সংক্রামক ওমিক্রন। যেই একজন বাড়ির বাইরে মাস্ক পরছেন না, তিনি ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন। নিজে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি বাড়ির বাকি সদস্যদেরও সংক্রামিত করছেন। ওমিক্রনে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি, এ কথা মাথায় রাখতে হবে।”
উৎসবের মরশুমে কী করা উচিত, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যত্নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিতে চাই। সামনেই ক্রিসমাস ও নববর্ষ, এই সময়েই নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে। সেই কারণেই মাস্ক পরা, নিয়.মিত হাত ধোয়া ও জমায়েত না করার বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজন কড়া নজরদারির। বিনা কারণে ভ্রমণ, ভিড় জমানোর মতো বিষয় এড়িয়ে যেতে হবে। আমাদের কাছে ভ্যাকসিন রয়েছে, কিন্তু তা সংক্রমণ রোখার জন্য পর্যাপ্ত নয়। কন্টাক্ট ট্রেসিং ও নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সংক্রমণ সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে।”
আসন্ন বিপদের আশঙ্কায় হাসপাতালগুলিকেও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গোটা স্বাস্থ্য ক্ষেত্র ও পরিকাঠামোই যাতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত থাকে, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
আরও পড়ুন: Mig 21 Crash: ফের দুর্ঘটনার কবলে বায়ুসেনা বিমান, প্রাণ হারালেন পাইলট