‘সার্টিফিকেটে উল্লেখ থাকতেই হবে করোনায় মৃত্যু’, হিসাবে গরমিল রুখতে কঠোর কেন্দ্র
সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে মধ্য প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পাঁচ রাজ্যেই প্রকাশিত নথির তুলনায় কমপক্ষে ৪.৮ লাখ বেশি মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি।
নয়া দিল্লি: করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে একাধিক রাজ্যে গরমিল দেখা দিতেই এ বার বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। করোনায় মৃতদের ক্ষতিপূরণের একটি মামলায় এ দিন সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানায়, যে জায়গাতেই করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হোক না কেন, ডেথ সার্টিফিকেটে তা “করোনায় মৃত্যু” বলেই উল্লেখ করতে হবে। যদি কোনও চিকিৎসক এই নিয়ম অনুসরণ না করেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নেওয়াও হবে।
গত বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা সংক্রমণ শুরু হলেও কেবলমাত্র হাসপাতালে যে সমস্ত করোনা রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে, তাদেরই মৃত্যুর সার্টিফিকেটে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হত। কিন্তু বাড়িতে বা হাসপাতালের বাইরে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের করোনায় মৃত বলে ধরা হত না এবং মৃতদের তালিকাতেও যোগ করা হত না। কিন্তু শনিবার রাতে ১৮৩ পাতার হলফনামায় বলা হয়, “যে কোনও জায়গাতেই করোনা রোগীর মৃত্যু হোক না কেন, তা করোনায় মৃত্য়ু বলেই উল্লেখ করতে হবে।”
বিভিন্ন রাজ্য সরকারের তরফে করোনায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকেরই ডেথ সার্টিফিকেটে করোনায় মৃত্যু উল্লেখ না থাকায় তারা সেই আর্থিক সাহায্য পাননি। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে দুই ব্যক্তি আবেদন জানান। সুপ্রিম কোর্টের তরফেও কেন্দ্রকে প্রশ্ন করা হয়, “ডেথ সার্টিফিকেটে ফুসফুসের সমস্যা বা হৃৎরোগের সমস্যায় মৃত্যু বলে লেখা থাকছে। ফলে পরিবারগুলিকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটতে হচ্ছে ক্ষতিপূরণের টাকা উদ্ধারের জন্য। করোনায় মৃতদের সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট নীতি রয়েছে কী?” এরই জবাবে শনিবার কেন্দ্পের তরফে হলফনামায় করোনায় মৃতদের সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ উল্লেখের কথা বলা হয়।
সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে মধ্য প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পাঁচ রাজ্যেই প্রকাশিত নথির তুলনায় কমপক্ষে ৪.৮ লাখ বেশি মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি। গতকালই বিহারে প্রায় ৭৪,৮০৮ জনের মৃত্যুর কোনও হিসেব নেই। মহারাষ্ট্রেও মৃতের সংখ্যা সংশোধন করে ৮ হাজার ৮০০-রও বেশি সংখ্যক মানুষের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। শশ্মানের চিত্র ও সরকারি নথির মধ্যে বিস্তর ফারাক নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন ওঠায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।