বিক্ষুব্ধ ৫ সাংসদের এলজেপি ত্যাগ, নীতীশের ‘প্রতিশোধে’ই কি একা পড়ে গেলেন চিরাগ?

সূত্র অনুযায়ী, বিক্ষুব্ধ পাঁচ সাংসদ ইতিমধ্যেই চিরাগ পাসোয়ানের বদলে অন্য নেতৃত্বের দাবি জানিয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ ৫ সাংসদের এলজেপি ত্যাগ, নীতীশের 'প্রতিশোধে'ই কি একা পড়ে গেলেন চিরাগ?
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 14, 2021 | 11:24 AM

নয়া দিল্লি: রাতারাতি বদলে গেল রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ। চিরাগ পাসোয়ানের নেতৃত্বে অখুশি হয়ে লোক জনশক্তি পার্টি ছাড়লেন পাঁচ সাংসদ। ইতিমধ্যেই বিক্ষুব্ধরা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে চিঠি দিয়ে তাঁদের ভিন্ন দল হিসাবে গণ্য করার আবেদন জানিয়েছেন। এ দিকে, পাঁচ সাংসদই দল ছাড়ায় বর্তমানে লোকসভায় একক সাংসদ হওয়ায় কার্যত শক্তিহীন হয়ে পড়লেন চিরাগ পাসোয়ান।

গতবছর রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর পর থেকেই এলজেপির দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তাঁর পুত্র চিরাগ পাসোয়ান। কিন্তু বিহার নির্বাচনের আগে থেকেই দলের ভিতর তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে ক্ষোভ দেখা দেয়। এরপর নির্বাচনের ফলে ভরাডুবির কারণ হিসাবেও বহু দলীয় কর্মীই চিরাগকেই দোষারোপ করেছিলেন।  সূত্র অনুযায়ী, বিক্ষুব্ধ পাঁচ সাংসদ ইতিমধ্যেই চিরাগ পাসোয়ানের বদলে অন্য নেতৃত্বের দাবি জানিয়েছেন।

এলজেপি-র বিক্ষুব্ধ সাংসদদের নেতৃত্বে রয়েছেন চিরাগেরই কাকা পশুপতি কুমার পরস। রামবিলাস পাসোয়ানের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে চিরাগের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক। একই দলে থাকলেও কাকা-ভাইপোর মধ্যে কথাবার্তা কার্যত বন্ধ ছিল এতদিন। সূত্র অনুযায়ী, তলে তলে ইতিমধ্যেই নীতীশ কুমারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তিনি, মন্ত্রীসভায় তাঁকে জায়গা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

লোক জনশক্তি পার্টির বাকি সাংসদদেরও দলে টানার জন্য ললন সিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, এমনটাই খবর। বিক্ষুব্ধদের তালিকায় থাকা প্রিন্স রাজ, চন্দন সিং, বীণা দেবী ও মেহবুব আলি আগামিদিনে জনতা দল ইউনাইটেডকেই সমর্থন জানাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

গতবছর বিহার নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে এসে এককভাবে প্রার্থী দিয়েছিলেন চিরাগ পাসোয়ান। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাঁর প্রতিশোধ নিলেন জেডিইউ নেতা। এতদিন লোকসভায় মোট ছ’জন সাংসদ ছিল এলজেপি-র। একসঙ্গে পাঁচজনই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় লোকসভায় কার্যত প্রসঙ্গহীন হয়ে পড়বে লোক জনশক্তি পার্টি।

এ দিকে, দলের ভিতরে এত বড় ভাঙন ধরার জন্য পারিবারিক বিবাদ ও চিরাগ পাসোয়ানের ঔদ্ধত্যকেই দায়ী করছেন দলীয় কর্মীরা। রাম বিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর ঠিক পরেই বিবাদের জেরে চিরাগ পাসোয়ান তাঁর কাকা পশুপতি কুমারকে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছিলেন। সেই সময়ই পশুপতিও সাফ বলেছিলেন, “আজ থেকে তোমার কাছে তোমার কাকা মৃত”। সেই তিক্ততা আরও বাড়ে নির্বাচনের সময়ও দলীয় কর্মীদের খোঁজখবর না নেওয়ায়।

দলীয় সূত্রে খবর, এই সঙ্কটের আঁচ আগেই করা হয়েছিল, কিন্তু তা পাত্তা দেননি চিরাগ। নির্বাচনের সময় গোটা রাজ্য ঘুরে সকল দলীয় কর্মীর সমস্যা শোনার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন মিটতেই দলীয় কর্মীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তিনি। বিধায়কদের দেখাদেখি এ বার কর্মীরাও দল ছাড়তে পারেন বলে আশঙ্কা।