
নয়া দিল্লি: বিতর্ক, আন্দোলনের পর অবশেষে আরাবল্লী পর্বত নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের। নতুন করে কোনও মাইনিং বা খননের লিজ দেওয়া যাবে না গোটা আরাবল্লীর রেঞ্জে (Aravalli Range)। সকল রাজ্য যেখানে আরাবল্লী অবস্থিত, তাদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পর্বতের ‘নতুন সংজ্ঞা’তেই অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছে ভারতের সবথেকে প্রাচীন পর্বতমালার। যে পাহাড় এত বছর ধরে দিল্লি-এনসিআরকে থর মরুভূমির গ্রাসে চলে যাওয়া থেকে আটকেছে, জলের জোগান দিয়েছে, সেই পাহাড়েই বেআইনি খননের আশঙ্কা কেন্দ্রের এই নতুন সংজ্ঞায়। এই নিয়ে বিতর্ক, প্রতিবাদ শুরু হতেই বুধবার কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি পেশ করে বলা হয় যে সম্পূর্ণ আরাবল্লী রেঞ্জে অর্থাৎ দিল্লি থেকে গুজরাট পর্যন্ত এই পাহাড়ি অঞ্চলে নতুন করে আর কোনও খননের লিজ দেওয়া হবে না।
আরাবল্লীর পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল অঞ্চল সংরক্ষণ করতে এবং এর অনন্য জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ফরেস্ট্রি রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন-কেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরাবল্লী পর্বতে এমন অঞ্চল ও জোনগুলি চিহ্নিত করতে, যেখানে খনন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। পরিবেশগত ও ভূতাত্ত্বিক বিষয়গুলি পর্যালোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরাবল্লীর যে অংশগুলিতে ইতিমধ্য়ে খনন চলছে, সেখানে যেন পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলী মানা হয় এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারগুলিকে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের পরিবেশ মন্ত্রকের পর্বতের নতুন সংজ্ঞা, যেখানে সমতল থেকে ১০০ মিটারের উচ্চতাকেই পর্বত বলে গণ্য করা হবে- এই সিদ্ধান্ত নিয়েই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত। গত ২০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টও আরাবল্লীর ‘সবুজ বেল্ট’ হিসাবে গুরুত্ব স্বীকার করেও এই সম্পূর্ণ রেঞ্জে খনন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবে সম্মতি দেয়নি। সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি ছিল, সম্পূর্ণ ব্যান হলে, বেআইনি খননের মতো কার্যকলাপ আরও বৃদ্ধি পাবে। তার থেকে ঝাড়খণ্ডের সারান্ডায় যেমন পরিকল্পনা মাফিক বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে খননের মডেল রয়েছে, সেই ধরনের প্ল্য়ান তৈরি করতে হবে।
তবে শীর্ষ আদালতের পর্বতের নতুন সংজ্ঞা গ্রহণ করা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়, কারণ আরাবল্লীর ৯০ শতাংশ পাহাড়ের উচ্চতাই ১০০ মিটারের নীচে।