নয়া দিল্লি: বাংলায় বিধানসভা ভোটের পর থেকেই অধীর-পদে বেড়েছে অস্থিরতা। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে নিয়ে নানা জল্পনা শোনা যাচ্ছে। সেই জল্পনা এতদিন রাজ্য রাজনীতির চৌহদ্দির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার তার পদচারণ জাতীয় রাজনীতিতেও। জোর চর্চা শুরু হয়েছে, অধীরের গুরুত্ব কমাতে চাইছে কংগ্রেস। গুঞ্জন জোরাল, রাজ্যসভাতে কংগ্রেস তাদের দলনেতা পরিবর্তন করতে পারে। লোকসভায় দলনেতার পদ নিজেই নিতে পারেন সোনিয়া গান্ধী। সে ক্ষেত্রে সোনিয়া লোকসভার দলনেতা হলে কংগ্রেসের কোনও ‘গোষ্ঠী’রই আপত্তি থাকবে না। আর তার হাত ধরে বদলে যাবে এ রাজ্যে কংগ্রেসী রাজনীতির সমীকরণও।
দু’ সপ্তাহের মধ্যেই সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। দিল্লি কংগ্রেসের অন্দরে জোর জল্পনা, তার আগেই লোকসভায় দলনেতা বদলের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কংগ্রেস অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বদল হতে পারে অধীরের পদ। কিন্তু কেন বহরমপুরের সাংসদকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা পদ থেকে সরানোর কথা ভাবছে কংগ্রেস?
১. সব দলকে সঙ্গে নিয়ে না চলার অভিযোগ রয়েছে অধীরের বিরুদ্ধে।
২. অধীরের সঙ্গে বিজেপির নৈকট্য নিয়েও জল্পনার অন্ত নেই।
৩. তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লাগাতার কড়া বাক্যবাণে আক্রমণের প্রবণতা অধীরের। যা জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সেতুবন্ধনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৪. বাংলায় জমি হারিয়ে একেবারে শূন্য ‘হাত’। সিপিএমের সঙ্গে জোট করেও কোনও লাভ হয়নি সেক্ষেত্রে।
২০১৬ সাল থেকে এ রাজ্যে তৃণমূল ও কংগ্রেসের পথ একেবারে আলাদা হয়ে যায়। ২০১৯-এর লোকসভা কিংবা ২০২১ সালের বিধানসভা — দুই ভোটেই কংগ্রেস ভরসা রেখেছে একেবারে বীপরিত পন্থায় বিশ্বাসী বামে। একুশের ভোটে তো আবার আইএসএফকেও সঙ্গী করেছে তারা। অথচ ভোটের ফলে তার কোনও প্রতিফলনই নেই। বাংলায় একটা আসনও না জিততে পারার দায় অধীরকেও নিতে হয়েছে প্রদেশ সভাপতি হিসাবে।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দু-মুসলমান আলাদা নয়, সকল ভারতীয়র ডিএনএ এক’, একতার বার্তা শোনালেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত
ভোটের ফল প্রকাশের পর পরই শোনা যাচ্ছিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে নতুন কাউকে আনতে চাইছে দিল্লি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নাকি এ নিয়ে দরবার করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের একাধিক নেতা। যদিও সে গুঞ্জন এখনও গুঞ্জনই। তবে এরইসঙ্গে এবার নতুন জল্পনা। এখন থেকেই ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপিকে রুখতে জোট বেঁধে লড়তে চাইছে দেশের একাধিক দল। সেখানে কংগ্রেসের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে কারও কারও মতে বাংলায় বিপুল ভোটে বিজেপিকে হারানোর পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই হয়ে উঠতে পারেন বিরোধী জোটের মুখ। আর সে কারণেই কংগ্রেস নিজেদের খোলনলচে বদলে নতুন করে শুরু করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অধীরকে সরালে তার কারণও সম্ভবত সেটাই হতে পারে।