দেশ: দূরে পাহাড়। সবুজের সমারোহ। এলাহি ঘরের কাউচে গা এলিয়ে আধশোয়া কানহাইয়া কুমার (Kanhaiya Kumar)। হাতে কবিতার বই। একসময়ের মুষ্টিবদ্ধ হাতে আজাদি স্লোগান তোলা সিপিআই নেতার কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার একমাস-ও হয়নি। ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ক্রাউড ফান্ডিং করে ভোটে লড়া কানহাইয়ার এই আয়েশি ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া। রীতিমতো ট্রোলড হচ্ছেন তিনি। কেউ লিখেছেন, ‘কংগ্রেস লাইফ,’ কোনও নেটিজেন কটাক্ষ করেছেন, ‘ কংগ্রেসে আজাদির আসল মানে খুঁজে পেয়েছেন’ ।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেছেন অধুনা কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার। সম্ভবত কোনও এক ঝাঁ চকচকে হোটেলে থেকে তোলা সেই ছবি। সেখানে কানহাইয়াকে দেখা যাচ্ছে হিন্দি কবিতার বই হাতে পাহাড়ঘেরা খোলা জানলার দিকে মুখ করে বসে আছেন। আর ছবির ক্যাপশনে প্রখ্যাত উর্দু কবি বশির বদরের কবিতার পংক্তি তুলে ধরেছেন কানহাইয়া কুমার। লিখেছেন, ‘যদি আমি চুপ থাকি, তা হলে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে। আমি যা বলিনি, তাও শুনে ফেলে।’ ঘটনাচক্রে তাঁর এই ছবি নিয়ে দেদার ট্রোল শুরু হয়েছে নানা সোশ্যাল সাইটে।
কোনও নেটিজেন লিখেছেন, ‘এই স্বাধীনতা আর সিপিআই-তে কোথায় ছিল!’, কারও টিপ্পনী, ‘ওয়াহ্ কিয়া সিন হ্যায়!’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘সিপিআইসি নিকাল তে হি, কুছ দূর চলতে হি…’
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর সামে দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন সিপিআই নেতা কানহাইয়া। সেদিন পটনার সিপিআই কার্যালয়ে নিজের ঘর থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র খুলে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে বিহারের সিপিআই নেতারা জানিয়েছিলেন, ওই এসি নিজের টাকায় বসিয়েছিলেন কানহাইয়া। তাই তাঁরা আপত্তি করেছেন না। আর কংগ্রেসে যোগ দিয়ে কানহাইয়া বলেছিলেন কংগ্রেস না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীর রাজনীতিতে প্রবেশের আগেই দেশের কাছে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। জেএনইউ-র বিতর্কিত স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে জেল যাত্রা থেকে তার পর একের পর এক সভায় তাঁর বক্তৃতা বহু মানুষের মন জয় করে। বাগ্মী বিহারের এই যুবকের ভোট রাজনীতিতে হাতেখড়ি ২০১৯ সালে। বেগুসরাই কেন্দ্র থেকে সিপিআই প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। ভোটে লড়ার খরচ তুলতে ক্রাউড ফান্ডিং করতে হয়েছিল। তাতে প্রবল সাড়া মিললেও ভোটে বিজেপি নেতা গিরিরিজ সিংয়ের কাছে হারতে হয়।
তার পর মোদী বিরোধী বক্তা হিসাবে পরিচিত কানহাইয়া একের পর এক সভা করেছেন। কিন্তু পরে দূরত্ব তৈরি হয় সিপিআই-র সঙ্গে। তার পর রাজনৈতিক মহলকে কিছুটা বিস্মিত করেই কংগ্রেসে যোগদান করেন তিনি। একসময়ে ঘামে ভেজা গায়ে একের পর এক সভায় বক্তব্য রাখা সেই কানহাইয়াকে হোটেলের ঘরে এভাবে দেখে ট্রোল করছেন অনেকে। তবে তিনি তো ক্যাপশনে লিখেই দিয়েছেন, ‘যদি আমি চুপ থাকি, তা হলে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে। আমি যা বলিনি, তাও শুনে ফেলে।’
আরও পড়ুন: দেখুন: কাজের ফিরিস্তি চাওয়ায় সপাটে চড় কংগ্রেস বিধায়কের