
কলকাতা: ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে অন্যতম প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা। দেশের সবথেকে পুরনো এই কমিউনিস্ট পার্টিতে এক সময় ছিলেন ধীরেন মুখোপাধ্যায়, ভূপেষ গুপ্ত, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, গীতা মুখোপাধ্যায়ের মতো নেতা-নেত্রীরা। যে দলের হয়ে জিতে সংসদে চাঁচাছোলা যুক্তি সাজাতেন গুরুদাস দাশগুপ্ত, সেই সিপিআই কি লোকসভা ভোটে কাস্তে ধানের শিস নিয়ে লড়তে পারবে? কারণ গত বছর সিপিআই জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোর পরেই তাদের প্রতীক কেড়ে নেয় নির্বাচন কমিশন। চেনা প্রতীক যাতে হাত ছাড়া না হয় তার জন্য কমিশনের কাছে কাতর আর্জি করছে এই বাম দল।
সিপিআই নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনটে রাজ্যে যেহেতু এই পার্টি সংগঠিত সুতরাং ইলেকশন কমিশনের আইন অনুযায়ী আমরা এই সিম্বল ব্যবহার করার যোগ্য। এই রাজ্যে আমাদের স্টেট্যাস না থাকলেও এই রাজ্যের জন্য ওই প্রতীক ব্যবহার করার অনুমতি আমরা চাইছি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার পাল্টা খোঁচা দিয়ে বলছেন, এতদিন কাস্তে ধান শিস বলে মানুষকে ভুল বুঝিয়েছেন। বলছেন তাঁদের জন্য কাজ করছেন। আসলে তাঁদের জন্য কাজ হয়নি। যদি তাঁদের জন্য কাজ করতেন তাহলে মানুষ তাঁদের ছুড়ে ফেলে দিতেন না।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতীক ধরে রাখতে গেলে বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে অন্তত ৬ শতাংশ ভোট পেতেই হবে। কোনও একটি রাজ্যে ভোট না পেলেও বেশ কিছু রাজ্যে ভাল ফল করতেই হবে। প্রতীক থাকার মাপকাঠিই হল দুই বা তার বেশি সাংসদ বা বিধায়কের সংখ্যা। এক সময় বাম জমানায় আসন ও ভোটের নিরিখে সিপিআইএমের পরেই থাকত সিপিআই। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিপিআইয়ের ভোট হু হু করে কমতে থাকে।
গত বিধানসভা ভোটে ১০টি আসনে লড়ে মাত্র ০.২ শতাংশ ভোট পায় সিপিআই। গত লোকসভা ভোটে বাংলায় সিপিআই প্রার্থীরা ০.৪ শতাংশ ভোট পায়। প্রার্থী সংখ্যা ছিল ৩। পাশাপাশি দেশেও পরপর নির্বাচনে ক্ষয়িষ্ণু সিপিআই। এখন কমিশন যদি সিপিআইয়ের ডাকে সাড়া না দেয় তাহলে বহু দিন পর অন্য প্রতীকে লড়তে হবে শতাব্দী প্রাচীন এই কমিউনিস্ট পার্টিকে। এদিকে প্রতীক চেয়ে আবার নির্বাচন কমিশনে চিঠি লিখেছে এসইউসিআই-ও।