নয়া দিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর। বাড়ল ডিএ (DA)। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বাড়ানো হল ৪ শতাংশ। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই নতুন হারে এই মহার্ঘ ভাতা (DA) কার্যকর হবে বলে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এমনকি পেনশনভোগীরাও পাবেন এই সুবিধা।
জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই DA ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সপ্তম পে কমিশনের প্রস্তাব অনুসারেই ডিএ ৪ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা ৩৮ শতাংশ। আরও ৪ শতাংশ বাড়ায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বেড়ে দাঁড়াল ৪২ শতাংশ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই বর্ধিত হারে ডিএ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চলতি মাস সহ গত দু-মাসের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন ৪৭.৫৮ লক্ষ কর্মী এবং ৬৯.৭৬ লক্ষ পেনশনভোগী। অতিরিক্ত ৪ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ায় বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ১২, ৮১৫.৬০ কোটি টাকার আর্থিক বোঝা চাপল।
উল্লেখ্য, কেন্দ্র ডিএ ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার ফারাক আরও বৃদ্ধি পেল। দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রের সঙ্গে ডিএ-র ফারাক ঘুটিয়ে বকেয়া মেটানোর দাবিতে পথে নেমেছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। এবার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ আরও ৪ শতাংশ বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়তে চলেছে। যদিও এভাবে তুলনা করা যায় না বলে দাবি তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের (Shantanu Sen)। তিনি বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এভাবে তুলনা করলে চলবে না। এখনও বাংলা ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে পায়। তা সত্ত্বেও বিনামূল্যে রেশন থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্য সাথী থেকে মিড-ডে মিল চালাতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। বাংলা কিন্তু একসঙ্গে ১০৬ শতাংশ ডিএ দিয়েছে। যেখানে বামফ্রন্ট ৩৩ কিংবা ৩৫ শতাংশ ডিএ দিয়ে চলে গিয়েছিল। বাংলা একমাত্র রাজ্য যেখানে সরকারি কর্মচারীরা এখনও পেনশন পায়। হেল্থ স্কিমের মাধ্যমে অবসরের পরেও প্রচুর টাকার চিকিৎসা করতে পারে। বাংলা একমাত্র রাজ্য যেখানে কোভিডের সময় কাজ না করেও সরকারি কর্মচারীরা মাসের পয়সলা তারিখে মাইনে পেয়েছে।” একইসঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি (TMC MP) আরও বলেন, “ডিএ যদি কারও মৌলিক অধিকার হত, তাহলে কেন্দ্রের সরকার কী ভাবে বলে দিল ১৮ মাসের ডিএ দেবে না। ডিএ মৌলিক অধিকার নয়, এটা যে ভাতা প্রমাণিত।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল দাবি জানিয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, “আমাদের সরকার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীল। চাকরির বয়স ৩২ বছর থেকে ৪০ বছর করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের সরকারি সুযোগ-সুবিধা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করেছেন। কেন্দ্রের পাওনা টাকা যদি পাওয়া যেত তাহলে বাকি দিকটাও নিশ্চয়ই মিটিয়ে দেওয়া যেত। সেটা মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন। তা না হলে এভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের তুলনা করা যাবে না। যখন এভাবে রাজ্যকে আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার।”