নয়া দিল্লি: একের পর এক মেট্রো শহরগুলিতে লাগামছাড়া ভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ(COVID-19)। রাজধানীতে ফের বড়সড় লাফ দৈনিক করোনা সংক্রমণে। গত ঘণ্টাতেই দিল্লি(Delhi)-তে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৩৩৫ জন। একদিনেই সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও, একদিনেই দিল্লিতে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
প্রায় আট মাস পর গত বুধবারই বড় লাফ দেয় করোনা সংক্রমণ। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার পার করে। তারপর থেকেই ক্রমশ উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। বর্তমানে দিল্লির সংক্রমণের হার, অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.৭৩ শতাংশে। গতকাল সকালেই দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্য়েন্দর জৈন (Satyendar Jain) জানিয়েছিলেন যে, রাজ্যে হয়তো ১৭ হাজারেরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলতে পারে এবং সংক্রমণের হারও ১৭ শতাংশে বেড়ে দাঁড়াতে পারে।
রাজধানী দিল্লিতে হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য ওমিক্রন(Omicron) ভ্যারিয়েন্টকেই দায়ী করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের থেকেও তিনগুণ বেশি সংক্রামক হওয়ায়, দ্রুত এই ভ্যারিয়েন্ট সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। এর আগেই জানানো হয়েছিল, দিল্লির করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত।
আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এখনও হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্য়েন্দর জৈন বলেন, “সংক্রমণ মৃদু কিনা, তা বিশেষজ্ঞরাই জানাতে পারবেন। তবে হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার এখনও অনেকটা কম।” তবে ১ জানুয়ারি যেখানে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ২৪৭, শুক্রবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৯০-এ, অর্থাৎ ৪৬২ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে গত এক সপ্তাহেই।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল আগেই জানিয়েছিলেন, সবথেকে খারাপ পরিস্থিতিতে প্রতিদিন যদি ১ লক্ষ মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিকাঠামো দিল্লি সরকারের রয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজধানীর সব বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোম কে সরকারের তরফে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের সাধারণ বেডের ৪০ শতাংশ ও আইসিইউ বেডের ৪০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সংরক্ষণ করতে। আগামী দিনে দিল্লির পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেদিকে নজর থাকবে সকলের।
সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই একাধিক বিধিনিষেধ জারি করেছে দিল্লি সরকার। নৈশ কার্ফুর পাশাপাশি গতকাল থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহন্তে কার্ফু। শুক্রবার রাত ১০টা থেকে সোমবার ভোর ৫টা অবধি এই কার্ফু জারি থাকবে। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরই আইডি কার্ড দেখিয়ে আসা-যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে কার্ৎফু চলাকালীন সময়ে। এছাড়া ভ্যাকসিন নিতে যাওয়া মানুষ, পরীক্ষা দিতে যাওয়া শিক্ষার্থী, গর্ভবতী নারী ও সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য যাতায়াতে ছাড় দেওয়া হবে।একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কর্মীদেরও যাতায়াতে ছাড় দেওয়া হবে।