লক্ষদ্বীপে উন্নয়নের নামে ‘অকাজ’ হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীকে পত্রবাণ ৯৩ প্রাক্তন আমলার

সুমন মহাপাত্র |

Jun 06, 2021 | 2:09 PM

লক্ষদ্বীপে কোনও উন্নয়ন হচ্ছে না। উন্নয়নের নামে বর্বর নীতি আনা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ৯৩ আমলা।

লক্ষদ্বীপে উন্নয়নের নামে অকাজ হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীকে পত্রবাণ ৯৩ প্রাক্তন আমলার
ফাইল চিত্র

Follow Us

নয়া দিল্লি: বিগত কয়েকদিন ধরেই শিরোনামে লক্ষদ্বীপ (Lakshadweep)। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিংয়ে হ্যাশট্যাগ সেভ লক্ষদ্বীপ। দাবি উঠছে প্রশাসক প্রফুল্ল পটেলের পদত্যাগের। সেই আবহেই ৯৩ প্রাক্তন আমলা চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। চিঠি লিখে তাঁরা জানিয়েছেন, লক্ষদ্বীপের ঘটনায় তাঁরা উদ্বেগে। সব খসড়া আইন প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন আমলারা। চিঠিকে কোনও রাজনৈতিক রঙে না রাঙিয়ে সংবিধানকে মান্যতা দেওয়ার পক্ষে আমলারা সওয়াল করেছেন।

লক্ষদ্বীপে কোনও উন্নয়ন হচ্ছে না। উন্নয়নের নামে বর্বর নীতি আনা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ৯৩ আমলা। কেন লক্ষদ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা না বলে এই সিদ্ধান্ত নিলেন প্রশাসক প্রফুল্ল পটেল সে প্রশ্নও তুলেছেন প্রাক্তন আমলারা। তাঁদের দাবি, লক্ষদ্বীপে একজন ‘ফুল টাইম’, দায়িত্ববান প্রশাসক নিযুক্ত করা হোক। লক্ষদ্বীপে ৯৬ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মালম্বী। সেক্ষেত্রে তাঁদের ওপর কেন সংস্কৃতি বিরোধী নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে? সে প্রশ্নও করেছেন আমলারা।

ইতিমধ্যে কেরলের বিধানসভায় প্রশাসক প্রফুল্ল পটেলকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব পাশ হয়েছে। প্রফুল্ল পটেলের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছে একাধিক রাজ্যও। আইনের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেখানকার সাংসদ মহম্মদ ফয়জলের দল এনসিপির প্রধান শরদ পাওয়ার। আইনের বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, লক্ষদ্বীপের মানুষের অমতে কোনও নিয়ম চালু হবে না। এরপর আমলাদের চিঠিতে লক্ষদ্বীপের পরিস্থিতি শান্ত হতে পারে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।

কী কী খসড়া আইন এনেছেন পটেল?

গো-হত্যা নিষিদ্ধ: লক্ষদ্বীপের সংস্কৃতি ও কেরলের মালায়লাম জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মিল রয়েছে। তাঁরা গোমাংস খান। কিন্তু প্রশাসকের পদে বসে গোমাংস নিষিদ্ধ করার আইন আনার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রফুল্ল কে পটেল।

ভোটে লড়ার মাপকাঠি: স্থানীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে লড়ায় বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। তবে এক বিশেষ শর্ত জারি করার কথা বলেছেন প্রফুল্ল পটেল। যেখান বলা হয়েছে, যেসব প্রার্থীর ২-এর বেশি সন্তান রয়েছে তাঁরা ভোটে লড়তে পারবেন না। কেন এহেন আইন আনার কথা বলছেন প্রফুল্ল? তাহলে কি লক্ষদ্বীপের জন্মহার অত্যন্ত বেশি? পরিসংখ্যান বলছে সেখানে জন্মহার ১.৪। ভারতের উত্তর প্রদেশে বা বিহারে সেটা ৩ এর বেশি। অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যা নেই লক্ষদ্বীপে। সেখানকার স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু প্রভাবশালী নেতা যাতে নির্বাচনে লড়তে না পারেন, তাই এই আইন আনতে চাইছেন প্রফুল্ল পটেল।

গুন্ডাদমন আইন: একটি গুন্ডাদমন আইন আনতে চাইছেন প্রফুল্ল পটেল। যেখানে বিচার ব্যবস্থার আগে পুলিশের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্য রয়েছে। অর্থাৎ কাউকে কোর্ট ট্রায়ালে না ফেলেই আটক করে রাখার ক্ষমতা থাকবে পুলিশের হাতে। লক্ষদ্বীপে অপরাধ প্রবণতা অত্যন্ত কম। তাপরেও এই আইন কেন? উঠছে প্রশ্ন।

মদ বিক্রির সিদ্ধান্ত: এ যাবৎ লক্ষদ্বীপে মদ বিক্রির অনুমতি ছিল না। কিন্তু প্রফুল্ল পটেল প্রশাসক হওয়ার পর তিনি মদ বিক্রিতে অনুমতি দেন।

আরও পড়ুন: ভারতের ভ্যাকসিনে ভরসা নেই, ‘ডবল টিকা’ দিচ্ছে আমেরিকা

Next Article