‘মাঝখানে কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে’, রাফাল ইস্যুতে ‘স্টেপ আউট’ কংগ্রেসের

TV9 Bangla Digital | Edited By: সুমন মহাপাত্র

Jul 05, 2021 | 12:15 PM

Rafael Deal: "সারা বিশ্ব নয়া দিল্লির দিকে তাকিয়ে আছে। তারপরও কেন নিস্তব্ধতা?" এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে এই প্রশ্নবাণই ছুড়ে দিয়েছেন পবন খেরা

মাঝখানে কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, রাফাল ইস্যুতে স্টেপ আউট কংগ্রেসের
গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ

Follow Us

নয়া দিল্লি: ফ্রান্সে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু হতেই স্টেপ আউট করে সুর চরমে তুলেছে কংগ্রেস (Congress)। বারবার কেন্দ্রের উদ্দেশে প্রশ্নবাণ ছুড়ে দিচ্ছে হাত শিবির। শনিবার ওপেনিং করেছিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজওয়ালা। তারপর সকালে ‘চোরের দাড়ি’ মন্তব্যে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। এ বার সেই বিতর্কে আলাদাই মাত্রা যোগ করলেন কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা। ফ্রান্স বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু করার ২৪ ঘণ্টা পরেও কেন চুপ কেন্দ্র? এই প্রশ্নই ছুড়ে দিয়েছেন পবন।

কংগ্রেসের দাবি, রাফাল চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী কোটি টাকা পেয়েছে। সেই নথিও রয়েছে বলে দাবি তাদের। ৫৯ হাজার কোটি টাকার চুক্তিতে ‘দুর্নীতি, আর্থিক তছরূপ, স্বজনপোষণ’-এর অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে ফ্রান্স। সেখানেই পবন খেরার প্রশ্ন, “সারা বিশ্ব নয়া দিল্লির দিকে তাকিয়ে আছে। তারপরও কেন নিস্তব্ধতা?” এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে এই প্রশ্নবাণই ছুড়ে দিয়েছেন পবন।

শনিবারই রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ করে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত দাবি করেছিল কংগ্রেস। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সুরজওয়ালা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “রাফাল দুর্নীতি এ বার পরিষ্কার ভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। ফরাসি সরকার তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর এ দিন কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীর দাবি সত্য প্রমাণিত হয়েছে।” তাঁর দাবি, যে হেতু এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা জড়িয়ে আছে, তাই এই তদন্তের দায়ভার যুগ্ম সংসদীয় কমিটির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।

এরপরই রবিবার সকালে রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘চোরের দাড়ি’, হ্যাশট্যাগ রাফাল দুর্নীতি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এ ক্ষেত্রে চোরের দাড়ি বলতে প্রধানমন্ত্রীর দাড়িকে বুঝিয়েছেন কংগ্রেস নেতা তথা ওয়ানাদের সাংসদ। তবে প্রধানমন্ত্রীকে এহেন বেনজির আক্রমণের পাল্টা দিতে ছাড়েননি বিজেপির আইটি প্রধান অমিত মালব্য। পাল্টা টুইটে অমিত লিখেছেন, “২০১৯ সালে আপত্তিজনক মন্তব্যের পর রাহুল গান্ধী এ বার এত নীচে নেমে গিয়েছেন। সারা ভারতের মানুষ তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০২৪ নির্বাচনে এই ইস্যুতে লড়াইয়ের জন্য স্বাগত।”

কোত্থেকে সূত্রপাত?

গত এপ্রিলে একটি ফরাসি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল, চুক্তিতে মধ্যস্থকারী একটি সংস্থাকে বড় অঙ্কের টাকা ‘উপহার’ দিয়েছে রাফাল নির্মাণকারী সংস্থা দাসো। যদিও দাসো দাবি করেছিল, ১.১ মিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি টাকা) ভারতীয় একটি সংস্থাকে তারা দিয়েছে রাফালের রেপ্লিকা নির্মাণের জন্য। এই বিতর্ক প্রথম উস্কে দিয়েছিল ফরাসি দুর্নীতি দমন শাখা। দাসোর অডিটে এই বেনিয়ম ধরা পড়েছিল বলে দাবি করেছিল ফরাসি সংবাদ মাধ্যম। তাদের দাবি অনুযায়ী, দাসোর কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসেবে বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছিল অগস্টাওয়েস্টল্যান্ড চপার স্ক্যামের সঙ্গে যুক্ত সুশেন গুপ্তার সংস্থা।

এরপরই ভারত ও ফ্রান্সের এই রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে জোর গলায় সরব হয় বিরোধীরা। তখনই প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিবৃতি দাবি করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরেজওয়ালা তখন দাবি করেছিলেন, “ভারতীয় সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ স্বাধীন তদন্ত হওয়া কি উচিত নয়? যদি কোনও ঘুষ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেটা কত তা কি জানা প্রয়োজন নয়?” এরপর জুন মাসের ১৪ তারিখ একটি বেসরকারি সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে ফ্রান্সে শুরু হয় রাফাল চুক্তির তদন্ত। জুলাই মাসের ২ তারিখ এক বিচারপতির তত্ত্বাবধানে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয় ফরাসি সরকার। তারপর থেকেই ভারতে সরব কংগ্রেস।

আরও পড়ুন: ‘চোরের দাড়ি’, নাম না করেই রাফাল চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ রাহুলের

Next Article