Uttar Pradesh: মরণাপন্ন স্বামী, সেই সুযোগে স্ত্রীর উপর চড়াও হল অ্যাম্বুল্যান্স চালক
Uttar Pradesh: অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে কাতরাচ্ছেন গুরুতর অসুস্থ স্বামী। এই অসহায় অবস্থারই সুযোগ নিল অ্য়াম্বুল্যান্স চালক ও তার হেল্পার। অসুস্থ স্বামীর সামনেই অ্যাম্বুল্য়ান্সের মধ্যে যৌন নিপীড়নের শিকার হলেন স্ত্রী। স্বামীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে দেওয়া হল রাস্তায়। হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হল তাঁর।
লখনউ: অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে কাতরাচ্ছেন গুরুতর অসুস্থ স্বামী। নিউরোলজির রোগী তিনি। চিকিৎসার জন্য উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থনগরে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী। আর এই অসহায় অবস্থারই সুযোগ নিল অ্য়াম্বুল্যান্স চালক ও তার হেল্পার। অসুস্থ স্বামীর সামনেই অ্যাম্বুল্য়ান্সের মধ্যে যৌন নিপীড়নের শিকার হলেন স্ত্রী। শুধু তাই নয়, দুর্বৃত্তরা তাঁর স্বামীর মুখ থেকে অক্সিজেনের মাস্ক খুলে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায় বলেও অভিযোগ। আরজি করের ন্যক্কারজনক ঘটনার আবহে যখন উত্তাল গোটা দেশ, সেই সময়ই এই জঘন্য ঘটনা ঘটল লখনউয়ের গাজীপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, গত বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন নির্যাতিতার স্বামী। এরপর, তাঁর স্ত্রী ওই ব্যক্তিকে, কে আরাবলি মার্গের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু, বেসরকারি হাসপাতালের খরচ অনেক। সেই খরচ বহন করতে না পেরে, ওই মহিলা স্বামীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেছিলেন। মহিলার সঙ্গে তাঁর ভাইও ছিলেন।
নির্যাতিতার অভিযোগ, এক প্রকার জোর করেই তাঁকে ড্রাইভার এবং তার হেল্পারের সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সের সামনের আসনে বসতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর থেকেই ওই দুজন তাঁকে খারাপভাবে স্পর্শ করতে শুরু করে। তিনি চিৎকার কর উঠেছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে শুয়েও কী ঘটেছে তা টের পেয়েছিলেন তাঁর স্বামী। তিনি ও নির্যাতিতার ভাইও চিৎকার করতে শুরু করেন। কিন্তু, অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও তার হেল্পার তাতে এতটুকু বিচলিত হয়নি। মহিলা আপ্রাণ বাধা দিতে থাকলেও, তারা তাঁর শ্লীলতাহানি করতে থাকে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, পরে তারা বস্তির ছাওয়ানি থানার প্রধান সড়কে অ্যাম্বুল্যান্স থামিয়ে, জোর করে তাঁর স্বামীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেয়। তাঁর ভাইকে সামনের কেবিনে তালাবন্ধ করে দেয়। এরপর, ওই মহিলার কাছ থেকে তারা তাঁর টাকা-পয়সার ব্যাগ, পায়ের নুপুর, মঙ্গলসূত্র, আধার কার্ড, হাসপাতালের রিপোর্ট এবং তাঁর কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা লুঠ করে পালিয়ে যায়।
পরে তার ভাই পুলিশ হেল্পলাইনে ফোন করে। আরও একটি অ্যাম্বুল্যান্সও ডাকা হয়। পুলিশ এসে নির্যাতিতা মহিলা ও তাঁর স্বামী ও পরিবারের আমাদের বিবৃতি রেকর্ড করে। পুলিশ তাঁর স্বামীকে হাসপাকালে ভর্তি করিয়ে ছাওয়ানি থানায় এসে এফআইআর দায়ের করতে বলে। এরপর নির্যাতিতা ও তার ভাই অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁর স্বামীকে বস্তি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। স্বামীর অবস্থা খারাপ দেখে, সেই হাসপাতাল থেকে তাঁকে গোরখপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। কিন্তু গোরখপুরে পৌঁছতে পৌঁছতে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়।
এরপর, পুলিশি অসহযোগিতার মুখেও পড়তে হয় নির্যাতিতাকে বলে অভিযোগ। ১ সেপ্টেম্বর বস্তির ছাওয়ানি থানায় গিয়ে তিনি এফআইআর দায়ের করতে গেলে, তাঁকে লখনউয়ে যেতে বলা হয়। তবে এই ঘটনা নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। এডিসিপি জিতেন্দ্র দুবে জানিয়েছেন, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে একটা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে, পুলিশ এখনও দোষী অ্যাম্বুল্যান্স চালককে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যোগী সরকারকে নিশানা করেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এবং কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা তথা রাজ্যসভার সদস্য প্রমোদ তিওয়ারি। প্রমোদ তিওয়ারি ইউপির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে, সপা প্রধান বলেছেন, “উত্তর প্রদেশ সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। হাথরস, গাজিয়াবাদ, এবং ফারুখবাদের ঘটনা কয়েকটি উদাহরণ মাত্র।”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)