
নয়া দিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের আগেই হঠাৎ বড় ধাক্কা নির্বাচন কমিশনে। পদ ছেড়ে দিলেন অরুণ গোয়েল। শনিবার হঠাৎই তিনি নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর ইস্তফার জেরে বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে ‘সবেধন নীলমণি’ হিসাবে রয়ে গেলন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। দেশের সবথেকে বড় নির্বাচন লোকসভা, একা মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কীভাবে করাবেন?
জাতীয় নির্বাচন কমিশনে তিনজন সদস্য থাকেন, একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও দুইজন নির্বাচন কমিশনার। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন অনুপ পান্ডে। এরপর শনিবার বিকেলে আচমকাই আরেক নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েল পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে ইস্তফাপত্রও পাঠিয়েছেন এবং তা গৃহীতও হয়েছে। ২০২৭ সালে অরুণ গোয়েলের অবসরের কথা ছিল। তবে মেয়াদ পূরণের ৩ বছর আগেই কেন তিনি হঠাৎ ইস্তফা দিলেন? তাও আবার লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার ঠিক আগে।
আগামী এপ্রিল-মে মাসেই হতে চলেছে লোকসভা নির্বাচন। সেই অনুযায়ী, মার্চ মাসেই নির্বাচনের দিন ঘোষণার কথা। জল্পনা শোনা গিয়েছিল, আগামী সপ্তাহেই লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হতে পারে। আগামী সোমবার থেকে বুধবার অবধি জম্মু-কাশ্মীরে যাওয়ার কথা নির্বাচন কমিশনের। উপত্যকার পরিস্থিতি ও ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পরই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করায়, একা মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জম্মু-কাশ্মীর যাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
কী কারণে হঠাৎ নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দিলেন, তা জানাননি অরুণ গোয়েল। আগামী বছরই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের অবসর। তারপর তাঁরই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার কথা ছিল। সূত্রের খবর, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে তাঁর মতপার্থক্য ছিল। তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েই নাকি তিনি ইস্তফা দিয়েছেন।
এবার নির্বাচন কমিশনের কী হবে?
একা একজন সদস্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন পরিচালিত হতে পারে না। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই শূন্যপদে কমিশনার নিয়োগ করা হবে। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে একটি টুইস্ট। গত বছরই কেন্দ্রের তরফে জাতীয় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের নিয়মে বদল আনা হয়। আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিও নিয়োগ প্যানেলে থাকতেন। তবে নতুন আইন অনুযায়ী, এবার প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মিলিতভাবে কাউকে বাছাই করবেন এবং তাঁর নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবেন। সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি।
তবে যে কাউকে বাছাই করে নির্বাচন কমিশনার করা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর কমিটি নাম সুপারিশ করার আগে একটি সার্চ কমিটি তৈরি হবে। এই কমিটিতে থাকবেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ও দুই সচিব। তাঁরা পাঁচজনের নাম বাছাই করবেন। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিয়োগ কমিটি কাউকে বেছে তাঁর নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।