নয়া দিল্লি: সিংঘু সীমান্তে (Singhu Border) নৃশংসভাবে এক দলিত যুবককে খুনের ঘটনার পরই সন্দেহের তীর উঠেছে আন্দোলনকারী কৃষকদের উপরই। নিজেদের পিঠ বাঁচাতে এ বার আন্দোলনস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা (CCTV Camera) বসানোর সিদ্ধান্ত নিল কৃষক নেতারা। শনিবার আন্দোলনকারী কৃষক নেতাদের তরফে জানানো হয়, এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য দিন রাত সীমান্তে পাহারা দেবে আন্দোলনকারী কৃষকদেরই একটি অংশ। একইসঙ্গে তারা জানান, এই ঘটনার সঙ্গে কৃষক আন্দোলনের কোনও যোগ নেই, তাই আন্দোলন জারিই থাকবে।
শুক্রবার সিংঘু সীমান্তে কৃষক আন্দোলন মঞ্চের পাশ থেকেই একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ওই যুবককে। খুনের পর মৃতের হাত কেটে ব্যারিকেডে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, দেহটি ১০০ মিটার পর্যন্ত টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে নিহত যুবকের নাম লখবীর সিং। ৩৫ বছর বয়স তাঁর। পঞ্জাবের তরণ তারণ জেলার বাসিন্দা ছিলেন তিনি।পেশায় শ্রমিক লখবীরকে শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অপমান করার অপরাধেই নিহাঙ্গ গোষ্ঠী আক্রমণ করেছিল বলে সন্দেহ।ঘটনায় এখনও অবধি মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে এই দেহ উদ্ধারের ঘটনাটি সামনে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ভোর ৫টা নাগাদ মৃতদেহটি ঝুলে থাকার খবর মেলে, সঙ্গে সঙ্গে দেহটি উদ্ধার হয়।
প্রথম যখন দেহটি নজরে আসে, তখন সেটি ব্যারিকেডে ঝুলছিল। উল্টো করে ঝোলানো ছিল দেহটি। চোখগুলো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। একটি হাতের কবজির পর বাকি অংশ আর নেই। পা দিয়েও রক্ত বেরিয়েছে প্রচুর। রক্তে ভেজা শরীর। চারিদিকে রক্তের ছিটে।
শুক্রবারই আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠন সংযুক্ত মোর্চার (Samyukta Kisan Morcha) তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, নিহত ওই দলিত যুবক বা নিহাঙ্গ গোষ্ঠী- কারোর সঙ্গেই এই সংগঠনের কোনও যোগাযোগ নেই। এরপরই শনিবার ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন(Bharatiya Kisan Union), যাদের নেতৃত্বে গাজিপুর সীমান্তে আন্দোলন চলছে, তারা জানান, এই ধরনের অপ্রীতিকর ও নৃশংস ঘটনা এড়াতে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। এছাড়াও আন্দোলনকারী কৃষকরা স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে আন্দোলনস্থল পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই পাশবিক হত্যায় ইতিমধ্যেই সরব হতে শুরু করেছেন রাজনীতিকরা। বিজেপি(BJP)-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন। লখিমপুরের ঘটনা এবং তারপর এই সিংঘু সীমানার পাশবিক হত্যা নিয়ে তোপ দেগেছেন কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত(Rakesh Tikait)-র বিরুদ্ধে। কংগ্রেস(Congress)-র তরফেও সরকারের ঘাড়েই দোষ চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে।