দিল্লি: যত সময় গড়াচ্ছে, ততই শক্তিশালী হচ্ছে কৃষক আন্দোলন (Farmers Protest)। সরকারের সঙ্গে ষষ্ঠ দফা বৈঠকের আগেই আগামীকাল কৃষকরা ভারত বনধ (Bharat Bandh)-র ডাক দিয়েছে। মূলত নয়া কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহারে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্যই এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের সমস্যা যাতে না হয়, সেই বিষয়টিকেও মাথায় রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয় কৃষক সংগঠন (Farmers association)-র তরফে।
সমগ্র দেশবাসীর কাছে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে সমর্থন জানানোর আবেদন রেখে কৃষক সংগঠনের তরফ থেকে জানানো হয়, আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর তিনটে অবধি বনধ ডাকা হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে বিনা সমস্যায় নিজেদের কাজে যোগ দিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই সকাল ১১টা থেকে বনধ কর্মসূচি শুরু করা হচ্ছে। ছাড় দেওয়া হবে অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) ও বিয়েবাড়ির ক্ষেত্রেও।
এই বিষয়ে ভারতীয় কৃষাণ ইউনিয়ন (Bharatiya Kisan Union)-র মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত বলেন,”সাধারণ মানুষের জন্য কোনও সমস্যা হোক, তা আমরা চাই না। সরকারের বেশ কিছু নীতিকে আমরা সমর্থন করি না, তা প্রকাশ করতেই এই প্রতিবাদ। এতদিন অবধি শান্তিপূর্ণভাবেই প্রতিবাদ প্রদর্শন করা হয়েছে এবং আগামী দিনেও একই পথ অনুসরণ করা হবে।” কর্মসূচি সম্পর্কে ভারতীয় কৃষাণ ইউনিয়নের সেক্রেটারি হরিন্দর সিং লাখোয়াল জানান, আগামীকাল কৃষক সংগঠনগুলির সদস্যরা জাতীয় সড়ক ও টোল প্লাজাগুলি আটক করে রাখবে।
অল মোটরস ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া (All Motors Transport Union of India) আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোয় আগামীকাল দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজ্য ট্রাক চলাচলে প্রভাব পড়তে পারে। সংগঠনের তরফ থেকে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলের আয়োজন করা হবে এবং জেলা কালেক্টর ও কমিশনারদের কাছে দ্রুত সমস্যা সমাধান চেয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
আরও পড়ুন: কৃষান যাত্রায় যোগ দিতে না পেরে রাস্তায় ধর্ণা, আটক অখিলেশ যাদব
অধিকাংশ বিক্রেতা ও ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (Trade Association)-ই কৃষক আন্দোলনে সমর্থন জানানোয় আগামীকাল দিল্লির গাজিপুর, ওখলা ও নারেলা মান্ডি বন্ধ থাকবে। ফলে ফল ও সবজির জোগানে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। একইভাবে মহারাষ্ট্রের ভাসি কৃষি পণ্য বাজারও বন্ধ থাকবে।
দিল্লি ও তামিলনাড়ুর কিছু ট্যাক্সি ইউনিয়ন (taxi Union)-ও কৃষকদের প্রতি সমর্থন দেখিয়ে আগামীকাল গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে অটো ও অন্যান্য যানবাহন চালু থাকবে বলেই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন (Bank Union)-ও এই প্রতিবাদে অংশ নেবে। কাজে যাতে প্রভাব না পড়ে, সেই কথা মাথায় রেখে সকলে হাতে কালো কাপড় বেঁধে কৃষকদের প্রতি সমর্থন জানাবেন।
বনধের সবথেকে বেশি প্রভাব দেখা যাবে পঞ্জাবে (Punjab)। বিগত একমাস ধরে সেখানে কৃষকরা প্রতিবাদ প্রদর্শন করছিলেন। এছাড়াও কর্নাটক (Karnataka), মহারাষ্ট্র (Maharashtra), তেলাঙ্গানা (Telangana), ত্রিপুরা (Tripura) ও অসম (Assam)-এও ধরনা মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। ফলে সাধারণ জনজীবন ব্যাহত হতে পারে।
কেন্দ্রের শাসক দলের বিরোধী প্রতিটি দলই কৃষকদের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন। কংগ্রেস (Congress), শিবসেনা (Shivsena), ডিএমকে (DMK), আরজেডি (RJD), সমাজবাদী দল (Samajwadi Party) , এনসিপি (NCP), আম আদমি পার্টি (AAP), গুপকর গোষ্ঠী (Gupkar Organisation) কৃষকদের ডাকে নিজ নিজ রাজ্যে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করবে বলে জানিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানালেও বনধে সমর্থন জানাননি।
আরও পড়ুন: নতুন সংসদ নির্মাণে ধাক্কা, ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন হলেও শুরু করা যাবে না নির্মাণ কাজ