বেঙ্গালুরু : ঠিকাদারের মৃত্যুতে আরও বিপাকে পড়লেন কর্নাটকের গ্রামন্নোয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পা। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করলেন মৃত ঠিকাদারের পরিবার। ওই এফআইআর-এ মন্ত্রীর দুই সঙ্গী বাসবরাজ এবং রমেশের নামও রয়েছে। মৃত ঠিকাদারের ভাই প্রশান্ত পাটিল বুধবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এফআইআর-এ নাম থাকা প্রত্যেককে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তাঁরা মৃতদেহ নেবেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ঠিকাদার সন্তোষ পাটিলের ভাই প্রশান্তের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে। অভিযোগপত্রে প্রশান্ত লিখেছেন, গ্রামীণ উন্নয়ন ও পঞ্চায়েতরাজ দফতরের অধীনে হিন্দলাগা গ্রামে ৪ কোটি টাকার কাজের বরাত পেয়েছিলেন সন্তোষ। ওই কাজের জন্য নিজের সমস্ত টাকা বিনিযোগ করেছিলেন। কিন্তু, কাজ হয়ে গেলেও টাকা পাননি। টাকার জন্য মন্ত্রীর কাছে কয়েকবার গিয়েছেন সন্তোষ। কিন্তু, মন্ত্রীর দুই সঙ্গী বাসবরাজ ও রমেশ ৪ কোটি টাকার ৪০ শতাংশ ঘুষ চান বলে অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে।
অভিযোগ দায়ের পর সন্তোষ পাটিলের ভাই প্রশান্ত পাটিল বলেন, “দাদার মৃত্যুর বিচার চাই। ঈশ্বরাপ্পা, বাসবরাজ এবং রমেশকে গ্রেফতার করা দরকার। এফআইআর-এ যাঁদের নাম রয়েছে প্রত্যেককে গ্রেফতার করতে হবে। গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমরা দাদার মৃতদেহ নেব না।”
সন্তোষের পরিবারের পাশাপাশি কর্নাটক কংগ্রেসও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। আজ অতিরিক্ত আইজিপি-র সঙ্গে দেখা করে অভিযোগপত্র জমা দেয় সে রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস। ঈশ্বরাপ্পাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে তারা। গতকাল সকালে সন্তোষ পাটিলের দেহ উদ্ধার হয় উদুপির একটি লজে। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে মিডিয়া ও বন্ধুদের মেসেজ করেছিলেন সন্তোষ। তাঁtর মৃত্যুর জন্য একমাত্র কেএস ঈশ্বরাপ্পা দায়ি বলে অভিযোগ করেন ওই ঠিকাদার।
গতকাল সন্তোষের মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই বলেছিলেন, “নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। সরকার কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।” সেই সময় ঈশ্বরাপ্পার পদত্যাগের দাবি খারিজ করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে আজ অভিযুক্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘটনার সমস্ত তথ্য তিনি খতিয়ে দেখছেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর দল তাঁর পদত্যাগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমি জানি না পদত্যাগ নিয়ে উনি(মন্ত্রী ঈশ্বরাপ্পা) কী বলেছেন। তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সেইমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” গতকাল অবশ্য সন্তোষের মৃত্যুর পর ঈশ্বরাপ্পা জানিয়েছিলেন, সন্তোষকে তিনি চিনতেন না। এই মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ি নন। পদত্যাগের দাবিও খারিজ করে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : Suicide note: ‘আমার মৃত্যুর জন্য মন্ত্রী দায়ী’, কয়েকঘণ্টা পর দেহ উদ্ধার ঠিকাদারের