নয়া দিল্লি: শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে একাধিকবার আলোচনা-বিতর্ক হয়েছে। সেই সংরক্ষণ আর কত প্রজন্ম ধরে চলবে, এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ প্রশ্ন করেছে, “স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও কি আমাদের মানতে হবে কোনও অনগ্রসর শ্রেণিই অগ্রসর হয়নি?” সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছিল মহারাষ্ট্রের মারাঠা সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিল নিয়ে। সেই শুনানি চলাকালীনই এই প্রশ্ন করে সুপ্রিম কোর্ট।
চাকরি ও শিক্ষায় মারাঠাদের ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে বিল পাশ করেছিল ঠাকরে সরকার। সেই বিল নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়, যদি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ বা কোনও উর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে সকলের সমান অধিকার কীভাবে ব্যক্ত হবে? ১৯৯৩ সালে ইন্দিরা সহায় মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, যেন কোনও সংরক্ষণই ৫০ শতাংশ না পেরিয়ে যায়। কিন্তু মারাঠাদের সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিল অনুযায়ী, ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ হলে সেই অঙ্কটা ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের এই প্রশ্নের মুখে মহারাষ্ট্রের পক্ষের আইনজীবী মুকুল রোহতগি জানান, আদালত ১৯৯৩ সালের রায়টি দিয়েছিল ১৯৩১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে। এখন জনসংখ্যা ১৩৫ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত। পাশাপাশি তিনি সংরক্ষণের বিষয়টি রাজ্য সরকারের হাতে ছাড়ার কথা জানান। সুপ্রিম কোর্টে রোহতগি জানান, কেন্দ্রের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ১০ শতাংশ সংরক্ষণও ৫০ শতাংশের সীমা পেরিয়ে যায়, তাই এই ক্ষেত্রে পরিবর্তন প্রয়োজন।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি এস আবদুল নাজ়ির, বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত ও বিচারপতি এল রবীন্দ্র ভট্ট প্রশ্ন করেন, যদি উর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে সাম্যের কী হবে? পাশাপাশি অনগ্রসরতা কাটিয়ে না উঠতে পারার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তখন রোহতগি জানান, দেশে উন্নয়ন হয়েছে। তবে অনগ্রসর শ্রেণির শতাংশ ব্যাপক হারে কমে যায়নি। এখনও মানুষকে অনাহারে মরতে হয়। দেশে অনগ্রসর শ্রেণিভুক্তদের সংখ্যাও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সাত সকালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! দাউ দাউ করে জ্বলল শতাব্দী এক্সপ্রেসের কামরা