নয়া দিল্লি: ২০ বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণ ভোল পাল্টে ফেলবে রাজধানী দিল্লি (Delhi)। ভবিষ্যতে একদিকে দিল্লিতে যেমন বুলেট ট্রেনের (Bullet Train) ব্যবস্থা থাকবে, তেমনই আবার রোগীকে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য ২৪ ঘণ্টা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স(Air Ambulance)-র পরিষেবাও চালু রাখা হবে। সড়ক, রেল ও জলপথে আমূল পরিবর্তন এনে দিল্লিকে আধুনিক ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সেই লক্ষ্যেই মঙ্গলবার এনসিআর প্ল্যানিং বোর্ড(NCRPB)-র তরফে খসড়া পরিকল্পনা ২০৪১ (Draft Regional Plan-2041)-কে গ্রহণ করা হল।
এই খসড়া পরিকল্পনায় আগামিদিনে কীভাবে দিল্লিকে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে গোটা দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়, তা নিয়ে একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল দেশের বড় বড় শহরগুলির সঙ্গে দিল্লিকে সংযুক্ত করতে সুপার ফাস্ট ট্রেনের ব্যবস্থা, যা আধ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। দিল্লির সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতেও ৩০ মিনিটের মাস ট্রানজিট রেল সিস্টেম চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি সরকারের প্রকাশিত বিবৃতি অনুযায়ী, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর উপস্থিতিতেই ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন প্ল্য়ানিং বোর্ডের তরফে এই খসড়া পরিকল্পনায় সিলমোহর দেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির উন্নয়ন মন্ত্রী সত্যেন্দর জৈন, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর, রাজস্থানের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শক্তি কুমার ধারিওয়াল ও উত্তর প্রদেশের খাদি গ্রাম উদ্যেগ মন্ত্রী সিদ্ধার্থ নাথ সিং। এছাড়াও দিল্লির বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল যে পরিকল্পনায় সিলমোহর দেওয়া হয়েছে, তা শীঘ্রই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে জনগণের মতামত নেওয়ার জন্য। এনসিআরপিবির তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বোর্ডের তরফে ২০৪১ সালের খসড়া পরিকল্পনায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিছু সংশোধনের পর। জনসাধারণের মতামত নেওয়ারস পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে বোর্ডের কাছে চূড়ান্ত পরিকল্পনা জমা দিতে হবে।”
বুলেট ট্রেন, হেলিট্যাক্সি, আধুনিক সড়ক ও রেল ব্যবস্থার মাধ্যমেই দিল্লির সঙ্গে অন্যান্য বড় শহরগুলির যোগাযোগ আরও দৃঢ় করা হবে বলে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে আকাশ, সড়ক, রেল ও জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে মাল্টি মোডাল সংযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
খসড়া পরিকল্পনায় ইলেকট্রিক মোবিলিটির পরিকাঠামোর উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বায়ুদূষণ, জল দূষণ কমানোর জন্য যোগায়োগের বিকল্প পদ্ধতি হিসাবেই ইলেকট্রিক পরিবহন ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বস্তিহীন, স্বচ্ছ ও আধুনিক এনসিআর অঞ্চলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা চালুরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পরিকল্পনায় জানানো হয়েছে, ৩০ মিনিটের মধ্যে দিল্লি থেকে অপর শহরে পৌঁছে দিতে সুপারফাস্ট ট্রেনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কপথে যানজট কমানোর জন্যও বিশেষ পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য কীভাবে কম খরচে আধুনিক গণপরিহন ব্যবস্থা চালু করা যায়, সেই বিষয়েও একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খসড়া পরিকল্পনায় পর্যটন ব্যবস্থাকে আরও আকর্ষণী করে তুলতে হেলিট্যাক্সি চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, প্রতিটি জেলার সদর দফতর ও পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে এই হেলিকপ্টার ট্যাক্সি রাখা থাকবে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন: Coal Crisis: আঁধারে নয়,উৎসবে দেশকে আলো ঝলমলে রাখতে বিকল্প পথ দেখাল প্রধানমন্ত্রীর দফতর