নয়া দিল্লি : করোনা পরিস্থিতিতে ভারতীয় অর্থনীতির উপর বিগত প্রায় দুই বছর বেশ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তবে গত কয়েক ত্রৈমাসিকে ধাপে ধাপে ফের ট্র্যাকে ফিরতে শুরু করেছে ভারতীয় অর্থনীতির চাকা। অবশ্য এরই মধ্যে ফের বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষের আবহে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় অর্থনীতির হাল হকিকত জানিয়ে প্রকাশ হল জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের রিপোর্ট। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমছে আগের থেকে। প্রকাশিত রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৪ শতাংশ। গত দু’টি ত্রৈমাসিকের তুলনায় এই হার কম।
এর আগে পূর্বাভাস প্রকাশ করে বলা হয়েছিল যে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৯.২ শতাংশ হবে। তবে চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম হওয়ায় নয়া পূর্বাভাসে সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির হার ৮.৯ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। এদিকে করোনা আবহে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৭.৩ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে সেই পূর্বাভাসের সংশোধন করা হল আজকের প্রকাশিত রিপোর্টে। সোমবার প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে সংশোধিত হার ৬.৬ শতাংশ। এই হারকেই চলতি অর্থবর্ষে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কিছুটা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এর আগে চলতি বছরের সংসদে বাজেট পেশের একদিন আগে আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। সেই রিপোরট অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ৯.২ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, কোভিড টিকাকরণ, জোগান সংক্রান্ত খাতে সংস্কার, করোনা বিধিনিষেধ শিথিল, রফতানি বৃদ্ধি, মূলধনী খাতে ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধির মতো বিষয়ের ফলে লাভবান হবে ভারতের অর্থনীতি। এর ফলে চাপে থাকা অর্থনীতি জোর পাবে। যদিও সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের পূর্বাভাসে বলা হল, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ৮.৯ শতাংশ হতে পারে।
এর আগে আর্থিক সমীক্ষায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছিল, করোনা সংক্রমণের নতুন কোনও ঢেউ আছড়ে না পড়লে এবং এর জেরে বিধিনিষেধ কার্যকর না হলেই এই আর্থিক বৃদ্ধির হার বাস্তব রূপ নিতে পারে। পাশাপাশি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণের নেপথ্যে আশা করা হচ্ছে যে চলতি বছরে বর্ষা যদি স্বাভাবিক হবে, বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অবস্থা স্থিতিশীল থাকবে, বিশ্বব্যাপী জোগানের গতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং বিশ্ব বাজারে ব্যারেলপিছু অপরিশোধিত তেলের দাম ৭০ থেকে ৭৫ ডলারের মধ্যে থাকবে। যদিও এই রিপোর্ট প্রকাশের দিনই আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপিছু ১০০ ডলারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের প্রভাব সরাসরি পড়তে চলেছে বিশ্ব অর্থনীতির উপর। এর জেরে জেরে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। আর এর ফলস্বরূপ অর্থনীতির গতি আবারও কমতে পারে বলে আশঙ্কা।
আরও পড়ুন : LIC PAN Link Deadline : হাতে বেশি সময় নেই, প্যান আপডেট না করলে বিনিয়োগ করতে পারবেন না LIC তে