Mamata in Goa: পা পড়ার আগেই হোঁচট, মমতা-সাক্ষাতে ‘না’ গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির
TMC in Goa: এখন গোয়ার রাজনীতির আকাশে যেমন পূর্বাভাস, তাতে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে দেখা করছেন না বিজয় সরদেশাই।
পানাজি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দেখা করবেন না গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির (Goa Forward Party) নেতা বিজয় সরদেশাই। আজ গোয়া ফরওয়ার্জ পার্টির সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। বিজয় সরদেশাইয়ের দল গোয়ায় বিজেপির জোটসঙ্গী। তাই গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির সঙ্গে মমতার এই বৈঠক যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন গোয়ার রাজনীতির আকাশে যেমন পূর্বাভাস, তাতে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে দেখা করছেন না বিজয় সরদেশাই।
পাহাড় থেকে রওনা দিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গন্তব্য সৈকত শহর গোয়া। আজ সন্ধ্য়ায় গোয়ায় পৌঁছে যাবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক দিক থেকে দেখলে মমতার জন্য ত্রিপুরার থেকেই কঠিন লড়াই গোয়ায়। ত্রিপুরা পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য। বাংলার রাজনৈতিক গতিবিধি সম্পর্কেও ত্রিপুরার একটি বড় অংশের আমজনতা যথেষ্টই ওয়াকিবহাল। তার উপর ভাষাগত একটা সুবিধা তো রয়েছেই ত্রিপুরাতে। কিন্তু গোয়ায় পায়ের তলায় মাটি পেতে গেলে, কাজটা এতটা সহজ হবে না মমতার জন্য। আর এই জটিল রাজনৈতিক সমীকরণের থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন মমতা।
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির নেতা বিজয় সরদেশাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। আর যেহেতু গোটা ফরওয়ার্ড পার্টি বিজেপির জোট সঙ্গী, তাই বিজয় সরদেশাইকে কাছে টানতে বিজেপি বিরোধী দলগুলকে একটি জোরালো বার্তাও দিতে পারতেন মমতা। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের নির্বাচনে নমোর বিরুদ্ধে মুখ হিসেবে মমতার নাম চূড়ান্ত করার জন্য সওয়াল করা যেত। সেই মতো জোড়াফুলের সঙ্গে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির নির্বাচনী বোঝাপড়ার অঙ্কও কষতে শুরু করে দিয়েছিলেন অনেক নেতা। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট। এখনও পর্যন্ত গোয়ার ঘরোয়া রাজনীতিতে যেমনটা শোনা যাচ্ছে, মমতার সঙ্গে দেখা করছেন না গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির নেতা বিজয় সরদেশাই।
এদিকে নেত্রীকে স্বাগত জানাতে বিগত কয়েকদিন ধরেই সাজো সাজো রব গোয়া তৃণমূলে। তৃণমূলের পোস্টারে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে দেখা যায়, পোস্টারে কেউ বা কারা কালি লাগিয়ে দিয়েছে। মমতার ছবি দেওয়া পোস্টার আজ রাস্তায় পড়ে। ধুলোয় লুটোচ্ছে। মমতার মুখ ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে পোস্টার থেকে। এমনই ছবি আজ সকালে ধরা পড়েছে।
তৃণমূলের গোয়া নেতৃত্ব ঘটনার জন্য সরাসরি অভিযোগ তুলছে বিজেপির দিকে। তাঁদের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই এই ধরনের কাণ্ড ঘটাচ্ছে। গেরুয়া শিবির অবশ্য তৃণমূলের এই সব অভিযোগকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূলের কোন ইস্যু নেই। তারা ইস্যু তৈরি করার জন্যই এসব বলছে।
গোয়ায় কংগ্রেসের শক্তি ক্রমেই দুর্বল হয়েছে। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন অনেক বিধায়ক। তবু নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে মরিয়া কংগ্রেসের গোয়া নেতৃত্ব। তাঁদের কথায়, বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমেছে সাধারণ মানুষের মনে। আর তাতে একমাত্র প্রতিবাদের মুখ নাকি কংগ্রেসই।
গতকালই, তৃণমূল কংগ্রেসের গোয়া শাখা টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করে। সেই ছবিতে দেখা গিয়ছিল, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তকে নিজেরা পায়ের নিচে চেপে ধরেছেন। এই ছবি সামনে আসার পর থেকেই নতুন করে গেরুয়া শিবিরে আক্রমণের মুখে পড়ে তৃণমূল। এই ঘটনার পরেই মমতার ছবি দেওয়া বেশ কিছু পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’brien) বলেন, “দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি এটা গোয়ার সংস্কৃতি নয়।”তিনি আরও দাবি করেছেন, বিজেপি স্থানীয় ব্যবসার ক্ষতি করছে, কারণ যে ঠিকাদাররা ওই পোস্টার হোর্ডিং লাগিয়েছিল এখন সমস্ত ভাঙচুর হোর্ডিংয়ের জন্য তাদের নিজস্ব পকেট থেকে অর্থ প্রদান করতে হবে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: সৈকত শহরে অস্তিত্ব পরীক্ষার লড়াই, পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করতে ময়দানে মমতা