নয়া দিল্লি: অপেক্ষা আর কয়েকদিনের, তারপরই শুরু হচ্ছে ছোটদের টিকাকরণ। তবে প্রথম সারির যোদ্ধা বা বয়স্কদের কথাও ভুলে যায়নি সরকার। সেই কারণেই আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে প্রথম সারির যোদ্ধা এবং বয়স্ক ও কোমর্ডিবিটি যুক্ত ব্যক্তিদের প্রিকশন জোজ় দেওয়া হবে। কারা এই টিকা পাবে, তা নিয়ে এখনও অনেকের মনে সংশয় রয়েছে। সেই সংশয় দূর করতেই কেন্দ্রের তরফেই মেসেজে পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আপনি প্রিকশন ডোজ় নিতে পারবেন কিনা।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল বলেন, “যারা আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে করোনার প্রিকশন ডোজ় নিতে পারবেন, তাদের টিকাকরণের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই কেন্দ্রের তরফে রেজিস্ট্রার করা নম্বরে মেসেজ পাঠানো হবে।”
তিনি আরও বলেন, “করোনা টিকার এই প্রিকশন ডোজ় প্রাথমিকভাবে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই দেওয়া হবে। কেউ যদি করোনা টিকা নেওয়ার পরও সংক্রামিত হন, তবে সংক্রমণ যাতে গুরুতর আকার ধারণ না করে এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মৃত্যু এড়ানো যায়, সেই সুরক্ষাই দেবে এই প্রিকশন ডোজ়।”
ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি বা যাদের কো-মর্ডিবিটি রয়েছে এবং করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তারাই প্রিকশন ডোজ় নিতে পারবেন ১০ জানুয়ারি থেকে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার ৯ মাস পার হয়ে গিয়েছে, একমাত্র তারাই এখন প্রিকশন ডোজ় নিতে পারবেন। এই বিষয়টি বুঝিয়ে লভ আগরওয়াল বলেন, “করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর শরীরে আপনাআপনি যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে, তা প্রায় ৩৯ সপ্তাহ বা ৯ মাস থাকে। এই সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। সেই কারণেই করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ় থেকে ৯ মাসের ব্যবধানে প্রিকশন ডোজ় দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
চলতি বছরের জানুারি মাসেই দেশে শুরু হয়েছিল প্রাপ্তবয়স্কদের গণটিকাকরণ কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের ৯০ শতাংশই করোনা টিকা পেয়ে গিয়েছেন। দেশের ৬৩.৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্করা করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই পেয়েছেন।
দেশে ক্রমশ করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের একবার হাই জাম্প দিয়ে ১০ হাজারের গণ্ডি পার করেছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনেও দেশে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার পার করেছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা কতটা জরুরি, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলা হয়, “দেশে যেহেতু নতুন করে করোনার নয়া স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়ছে, তাই টিকাকরণের আগে ও পরে মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।”
দেশের কয়েকটি শহরে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণের যে পরিসংখ্যান সামনে আসছে, তা দেখে তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা তৈর্ হয়েছে ফের একবার। একদিকে, মুম্বইতে যেমন একদিনে দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে ৮২ শতাংশ, দিল্লিতেও একদিনে ৮৬ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের ৮ রাজ্যকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলল কেন্দ্র। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। ৮ রাজ্যকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মৃত্যুর হার কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলি প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ও করোনা টিকাকরণে যাতে আরও বেশি গতি আনা যায়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়ছে।