Pahalgam Tourist Attack: পহেলগাঁও হামলার ছক কষেছিল এই প্রাক্তন কম্যান্ডো? উপস্থিত ছিল হিন্দু হত্যাতেও কে সে?
Pahalgam Tourist Attack Prime Suspect: সূত্রমতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুসাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে। এরপরে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) তে যোগ দেয় হাশিম। ধারণা, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে অনুপ্রবেশ করে হাশিম।

ভারতে জঙ্গি হামলায় যুক্ত ছিল পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনা কর্তাও। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি ছিল তা আগেই জানিয়েছিল তদন্তকারীরা। এবার তাঁদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেল। হাশিম মুসা নামের পাকিস্তানি জঙ্গিই হল পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী। এই হাশিম পাক সেনার প্রাক্তন কম্যান্ডো। ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটু প্রতিবেদন অনুসারে মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে এই খবর।
সূত্রমতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুসাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে। এরপরে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) তে যোগ দেয় হাশিম। ধারণা, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে অনুপ্রবেশ করে হাশিম। মূলত শ্রীনগরের কাছে কাশ্মীরের বুদগাম জেলায় ছিল হাশিমের আস্তানা।
নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্রের মতে, সম্ভবত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ (এসএসজি) মুসাকে এলইটিতে যোগ দিতে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের কাশ্মীর অভিযানকে শক্তিশালী করতে বলেছিল।
প্রশিক্ষিত প্যারা কমান্ডো মুসা, অপ্রচলিত যুদ্ধ এবং গোপন অভিযান চালাতে বিশেষজ্ঞ বলে মনে করা হয়। একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রশিক্ষিত কমান্ডোরা সাধারণত অত্যাধুনিক অস্ত্র পরিচালনাতেও সিদ্ধহস্ত হয়। যুদ্ধ করার ক্ষমতা, হাই নেভিগেশন স্কিল এবং কঠিন পরিবেশে বেঁচে থাকার দক্ষতা এদের আরও ভয়ানক করে তোলে।
জানা গিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তাবাহিনী এবং কাশ্মীরি নন এমন ব্যক্তিদের উপর হামলা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পহেলগাঁও ছাড়াও গত বছরে বারামুলা-সহ কাশ্মীরের দুই জায়গায় হামলার নেপথ্যেও ছিল এই কট্টরপন্থী পাক জঙ্গি। কী ভাবে, কোন পথে, কখন হামলা চালানো হবে তার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিল এই মুসাই।
সূত্রমতে, ১৪ জন কাশ্মীরি ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার্স (ওজিডব্লিউ) এর একজন মুসার এসএসজি ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যেই ১৫জন স্থানীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জঙ্গিদের সব রকম জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল এই কাশ্মীরি ওভার গ্রাউন্ড ওয়াকার্সরাই। এমনকি কোথায় সন্ত্রাস হবে তাও চিহ্নিত করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এঁরা।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই-এর ভূমিকাও এখন স্পষ্ট। ২০২৪ সালের অক্টোবরে উপত্যকায় সংঘটিত হামলায়ও একই ধরণ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ওই ঘটনায় ৬ জন অ-স্থানীয় ব্যক্তি, একজন ডাক্তার, দুইজন ভারতীয় সেনা সদস্য এবং দুইজন সেনা পোর্টার নিহত হয়েছিল। ২০২৪ সালে সংঘটিত তিনটি হামলায়ও মুসা জড়িত ছিল।
এনআইএ তদন্তকারীরা দক্ষিণ কাশ্মীরে পরিচালিত ওজিডব্লিউ এবং সন্ত্রাসী মডিউলের স্থানীয় নেটওয়ার্কের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রাই যে পহেলগাঁও আক্রমণকারী দলকে আশ্রয়, রসদ সরবরাহ করেছিল এবং হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র পরিবহনে সহায়তা করেছিল তাও উঠে এসেছে তদন্তে।
সূত্র অনুসারে, যদিও এখন নিশ্চিত হওয়া গেছে যে দুই পাকিস্তানি সন্ত্রাসী মুসা ও আলী ভাই এবং দুই স্থানীয় আদিল থোকার এবং আসিফ শেখ পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন, ওজিডব্লিউ-দের জিজ্ঞাসাবাদে আরও পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের জড়িত থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
তিন হামলাকারীর নাম হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং আলী ভাই ওরফে তালহা ভাই, উভয়ই পাকিস্তানি জঙ্গি এবং আবিদ হুসেন থোকার, জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগের বাসিন্দা।
