নয়া দিল্লি: বিগত কয়েক মাস স্বস্তি মিললেও দেশে ফের একবার বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। ‘নিউ নর্মালে’ ফের একবার অভ্যস্ত হওয়ার মাঝেই সংক্রমণের ভ্রূকুটিতে বেড়েছে উদ্বেগ। অফিসের পাশাপাশি খুলে গিয়েছে স্কুল-কলেজও, ফের একবার ক্লাসরুমে বসেই পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। তবে দিল্লি সহ একাধিক রাজ্যে ফের একবার সংক্রমণ মাথাচাড়া দিতেই উদ্বেগে রয়েছেন অভিভাবকেরা। স্কুলে গিয়ে সন্তান (Children) সংক্রমিত হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কা করলেও, সেই চিন্তা দূর করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাই (Health Experts)। তারা জানিয়েছেন, শিশুদের করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয়, তবে তার মৃদু উপসর্গই দেখা যাচ্ছে এবং সাধারণ চিকিৎসাতেই তারা দ্রুত সুস্থও হয়ে উঠছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বিশেষ চিন্তিত না হলেও, যারা করোনা টিকা নেওয়ার গ্রহণযোগ্য, তারা যেন দ্রুত টিকা নেন, সেই বিষয়ের উপরই জোর দিয়েছেন। একইসঙ্গে সঠিকভাবে মাস্কের ব্যবহার, হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজেশনের সাধারণবিধি মেনে চলারই পরামর্শ দিয়েছেন। এই বিষয়ে দিল্লির এইমসের ডিরেক্টর ডঃ রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, “আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। পূর্ববর্তী করোনার ঢেউয়ের প্রাপ্ত তথ্যে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে যদি শিশুরা যদি করোনা আক্রান্ত হয়, তবে তাদের মৃদু উপসর্গই দেখা যাচ্ছে এবং উপসর্গযুক্ত রোগীদের চিকিৎসাতেই তারাও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে।”
তিনি আরও জানান, করোনা টিকা নেওয়ার বয়স যাদের হয়েছে, তাদের দ্রুত টিকা নেওয়া উচিত। এখনও যারা টিকা নিতে পারবে না, তাদের নিয়েও উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। ছোটদের মধ্যে সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ করার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।
এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ চন্দ্রকান্ত লাহারিয়াও জানান যে, শিশুদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নজরে আসছে কারণ স্কুলগুলি খোলা রয়েছে। কিন্তু যখন স্কুল বন্ধ ছিল, তখনও ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ শিশু বিভিন্নভাবে সংক্রমিত হয়েছিল, এমনটাই সেরো সমীক্ষা ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো শিশুরাও করোনা আক্রান্ত হতে পারে, তবে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ মূলত মৃদু ও উপসর্গহীনই রয়েছে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট এলেও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। সুতরাং বলাই চলে যে, করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টেও শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আইসিএমআরের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল সমীরন পাণ্ডা বলেন, “গোটা বিশ্বের নথিই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে স্কুলগুলি গোষ্ঠী সংক্রমণের জন্য দায়ী নয়। বরং নিয়মিত ও যথাযথভাবে করোনাবিধি অনুসরণ, যেমন মাস্ক পরা, স্যানিটাইজেশন ও হাত ধোয়ার অভ্যাসের মাধ্যমেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া থেকে রোখা যায়।”
পাঁচ বছরের কমবয়সীদের মাস্ক না পরার পরামর্শ দেওয়া হলেও, ৬ থেকে ১১ বছর বয়সীদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও আশেপাশের সংক্রমণের পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে মাস্ক পরানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ১২ উর্ধ্ব সকলেরই বাড়ি থেকে বাইরে বের হলে, বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।