নয়া দিল্লি : বুস্টার ডোজ় নিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে নয়া ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের বহু নাগরিকই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে যে, প্রাপ্তবয়স্ক যেকোনও নাগরিক ১০ এপ্রিল থেকে কোভিডের বুস্টার ডোজ় নিতে পারবেন। বুস্টার ডোজ় নেওয়ার জন্য কোভিড টিকার দ্বিতীয় ডোজ়টি ৯ মাস আগে নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মেদান্তা (Medanta) এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা: নরেশ ত্রেহান। নিউজ৯ এই বিষয়ে কথা বলেছে তাঁর সঙ্গে। বুস্টার ডোজ় নিয়ে তিনি কী বলছেন বিস্তারিত বিরবরণ দেওয়া হল।
বুস্টার ডোজ় নিয়ে তাঁর মতামত
নিউজ৯ কে তিনি জানিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার খুব ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে, চিকিৎসক হিসেবে তিনি দেখেছেন যে কোভিড টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার ৯ মাস পর যাঁরা কোভিডের প্রিকশনার ডোজ় বা বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন তাঁরা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে বেশি সুরক্ষিত। কোনও মানুষের দেহে কতটা অনাক্রম্যতা তৈরি হয়েছে তা বোঝা যায় তাঁর শরীরে উপস্থিত অ্য়ান্টিবডি কাউন্ট দেখে। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, কোভিড টিকা নেওয়ার ৬ মাস পর থেকে অ্যান্টিবডি কমতে থাকে। তাই অ্য়ান্টিবডি যদি সত্যিই সুরক্ষা দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবডিকে বুস্ট করা উপকারী।
বুস্টার ডোজ় নেওয়ার উপকারিতা
ডা: নরেশ জানিয়েছেন যে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার দুটি উপকারিতা রয়েছে। প্রথমত, যে ব্যক্তি বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন তিনি অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষিত। এবং সংক্রমিতের সংখ্যাও অনেক কম। দ্বিতীয়ত, বুস্টার ডোজ় প্রাপ্ত ব্যক্তিরা কোভিড আক্রান্ত হলেও তাঁদের সংক্রমণের মাত্রা অনেকটা কম হবে। তাই সকলের বুস্টার ডোজ় নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
দ্বিতীয় ডোজ়ের পর ৯ মাসের কেন ফারাক?
বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষায় দেখা প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, ডোজ়ের কোভিড টিকা নেওয়ার ৬ মাস পর থেকে কোভিডের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি কমতে থাকতে। এদিকে বহু নাগরিক দ্বিতীয় ঢেউতে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ফলে এমনিতেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তাঁদের দেহে। তাই ডা: নরেশের মতে নয় মাসের ফারাক যথাযথ এবং ভারসাম্যযোগ্য।
প্রিকশন ডোজ় কি নিয়মিত ব্যবধানে নিয়ে যেতেই হবে?
কোভিড-১৯ ভাইরাসের সঙ্গে মানুষ আগে পরিচিত ছিল না। সম্পূর্ণ নতুন এবং অজানা পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছি সকলে। এই ভাইরাসের আচরণ এবং মিউটেশন সম্পর্কেও সঠিক তথ্য উপলভ্য নেই। বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯ নিয়ে তথ্য় এবং অভিজ্ঞতার রিয়্যাল টাইম শেয়ারিং হওয়া উচিত। সেই তথ্য় থেকেই বোঝা সম্ভব কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
করোনা অতিমারিতে কোমর্বিডিটি শঙ্কা
কোমর্বিডিটি বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন যে, কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা গিয়েছে। তিনি বলেছেন যে, কোনও ব্যক্তির ব্লাড প্রেশার, ট্র্যাকিকার্ডিয়া, ফুসফুসের সমস্যা এবং হৃদপেশিতে প্রদাহ। তাই কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর পুরোপুরি সুস্থ অনুভব না করলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
কোভিড-১৯ আমাদের কী শিখিয়েছে?
তাঁর মতে কোভিড-১৯ থেকে আমরা অনেক শিক্ষা পেয়েছি। আমরা বুঝতে পেরেছি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা কতটা জরুরি। যেসব মানুষের কোমর্বিডিটি ছিল তাঁরা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং অন্য কোনও হৃদরোগের সমস্যা বা ফুসফুসের সমস্যা থাকলে সেগুলি নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি বলে পরামর্শ দিয়েছেন ডা: নরেশ। তিনি বারবার নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জোর দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : Covid-19 Vaccine Price : সুখবর, এখন অনেক সস্তা কোভিশিল্ড-কোভ্যাক্সিন, দাম জানলে চমকে যাবেন