নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার বাজেট বক্তৃতায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মোদী সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন নির্মলা সীতারামন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, এই উদ্যোগে নাম ছিল না পশ্চিমবঙ্গের। অথচ, প্রায় প্রতি বছরই উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ বন্যার কবলে পড়ে। বুধবার, প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনা করতে গিয়ে ‘বাংলার প্রতি কেন্দ্রের এই বঞ্চনা’ নিয়েই সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই বাংলা বিরোধী অবস্থান নিয়েছে মোদী সরকার। তাই এতে আশ্চর্যের কিছু নেই।
এদিন, মোদী সরকারের বাজেট আসলে কী, তা বোঝাতে অভিষেক ‘Budget’ শব্দটির প্রতিটি অক্ষরের আলাদা আলাদা ব্যাখ্যা দেন। তাঁর মতে বি হল বিট্রেয়াল বা বিশ্বাসঘাতকতা, ইউ হল আনএম্প্লয়মেন্ট বা বেকারত্ব, ডি হল ডিপ্রাইভ বা বঞ্চনা, জি হল গ্যারান্টি, ই হল এক্সেন্ট্রিক বা খামখোলিপনা আর টি হল ট্র্যাজেডি বা বিপর্যয়। ডিপ্রাইভ বা বঞ্চনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই বন্যা নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক।
তিনি বলেন, “বাজেট বক্তৃতায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী বন্যা নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগের প্রস্তাব দিয়েছেন। বিহার, অসম, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম এবং উত্তরাখণ্ডের। উত্তরবঙ্গ দেশের অন্যতম বন্যা দুর্গত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও, বাংলাকে ফের বঞ্চনা করা হয়েছে। অথচ, উত্তরবঙ্গের ৮টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতেই বিজেপির সাংসদ রয়েছে। আশা করি জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের মানুষ আমার কথা শুনছেন।”
মঙ্গলবার তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বিহারের বিভিন্ন পরিকাঠামোগত বিনিয়োগের জন্য ২৬,০০০ কোটি টাকার প্যাকেজের পাশাপাশি, বিহারের বন্যা মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত ১১,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। বিহার ছাড়া সিকিম, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও অসমও বন্যা মোকাবিলার জন্য তহবিল পেয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে বাদ পড়েছে বাংলা। মঙ্গলবারই, এই প্রসঙ্গে বাজেটের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন একই বিষয় নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
শুধু বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেই নয়, সার্বিকভাবেই বাংলাবিরোধী অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্র বলে অভিযোগ করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, বাংলাকে বারেবারে ফাঁপা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মোদী সরকার। বাংলার সংস্কৃতিকে অশ্রদ্ধা করেছে। রাজ্যের ভাবমূর্তিকে ক্ষূণ্ণ করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি বলেন, “আজই রাজ্যসভায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাংলা নাকি কেন্দ্রের সহায়তাপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করতে পারেনি। আমি তাঁকে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি। ২০২১ সালে বাংলায় হারার পর, মনরেগা প্রকল্পে কেন্দ্র কত টাকা দিয়েছে বাংলাকে? আবাস যোজনা প্রকল্পে কত টাকা দিয়েছে বাংলাকে। তা জানান সেই শ্বেতপত্রে।”