নয়া দিল্লি: সিন্ধু নদের জল নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে, তার বয়স এখন ৬২ বছর বয়সী। এই বহু পুরোনো চুক্তি পর্যালোচনা এবং সংশোধনের জন্য এবার সরকারিভাবে পাকিস্তানকে নোটিশ দিল ভারত সরকার। আন্তঃসীমান্ত নদী সম্পর্কিত বিরোধগুলির মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলামাবাদের যে অস্থির দৃষ্টিভঙ্গি, সেই কারণেই এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বুধবারই (১৮ সেপ্টেম্বর) এই নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি সামনে আসলেও, এটি পাঠানো হয়েছে গত ৩০ অগস্ট। চুক্তির ১২ (৩) ধারার আওতায় এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০২৩-এর ২৫ জানুয়ারি, ভারতের পক্ষ থেকে এই চুক্তির একটি পরিবর্তনের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ভারত।
সিন্ধু জল চুক্তির ১২ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, চুক্তির বিধানগুলি সময়ে সময়ে সংশোধন করা যেতে পারে। এই নোটিশ পাঠিয়ে, পাকিস্তানকে এই চুক্তির পর্যালোচনার জন্য সরকারি স্তরে আলোচনা শুরু করতে বলেছে ভারত। জানা গিয়েছে, পরিস্থিতির মৌলিক এবং অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনগুলিকে তুলে ধরা হয়েছে ভারতের পাঠানো নোটিশে। ঠিক কী কারণে সিন্ধু জল চুক্তির বিভিন্ন ধারার অধীনে বাধ্যবাধকতাগুলির পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন, তা জানিয়েছে নয়া দিল্লি। জনসংখ্যা পরিবর্তন, পরিবেশগত সমস্যা এবং ভারতের কার্বন নির্গমন শূন্য করার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য পরিচ্ছন্ন শক্তির দ্রুত বিকাশ, ক্রমাগত আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রভাবের মতো আরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।
প্রসঙ্গত, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নয় বছর ধরে আলোচনার পর, ১৯৬০ সালে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর মধ্যস্থতা করেছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। তারাও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। এই চুক্তিটি, দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে টেকসই চুক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে সাম্প্রতিক কয়েক বছরে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ এবং জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কিত উত্তেজনার কারণে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। তার প্রভাব পড়েছে এই চুক্তির উপরও। জম্মু ও কাশ্মীরের চেনাব এবং নীলম নদীতে কিষাণগঙ্গা এবং রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করেছে ভারত। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এরই মধ্যে এই নোটিশ পাঠানো হল।