AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

দুনিয়ার উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রে ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড ইনস্টল করছে ভারত

স্বাধীনতার পর থেকেই এই এলাকার দখল নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত। চার দশক আগে, ১৯৮৪ সাল থেকে এই এলাকা পাকাপাকি ভাবে ভারতের দখলে। বরফ ঘেরা খাড়াই পাহাড়ে, দুনিয়ার দূর্গমতম এলাকায় সাধারণ অস্ত্রশস্ত্রই কাজ করে না। সেখানে ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড!

দুনিয়ার উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রে ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড ইনস্টল করছে ভারত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 16, 2025 | 7:50 PM

সবার অলক্ষ্যে বড় একটা চ্যালেঞ্জের প্রস্তুতি শুরু করেছিল সেনা। একইসঙ্গে, একই প্ল্যাটফর্ম থেকে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার মিসাইল উত্‍ক্ষেপণ। সঙ্গে দূরপাল্লার কামান থেকে গোলা বর্ষণ। অর্থাত্‍ ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড। ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড ব্যাপারটা নতুন কিছু নয়। ২০০৭ সালে প্রথমবার ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাডে থেকে পরীক্ষামূলক মিসাইল লঞ্চ করেছিল ভারত। তা হলে ২০২৫ সালে এসে সে কথা বলা হচ্ছে কেন? বড় চ্যালেঞ্জই বা কেন? তার কারণ, এবার দুনিয়ার উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রে ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড ইনস্টল করার কাজ শুরু করেছে ভারত। মাটি থেকে ২০ হাজার ফুট উপরে ২৭০ বর্গমাইল এলাকা।

স্বাধীনতার পর থেকেই এই এলাকার দখল নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত। চার দশক আগে, ১৯৮৪ সাল থেকে এই এলাকা পাকাপাকি ভাবে ভারতের দখলে। বরফ ঘেরা খাড়াই পাহাড়ে, দুনিয়ার দূর্গমতম এলাকায় সাধারণ অস্ত্রশস্ত্রই কাজ করে না। সেখানে ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড! প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা বলছেন, টার্গেটটা কার্যত প্রথমবার পরমাণু বোমা তৈরির মতোই চ্যালেঞ্জিং। প্রতি বছর ১৩ এপ্রিল সিয়াচেন ডে হিসাবে পালন করে ভারতীয় সেনা। এবারও হল। তার পরেই সামনে এল সিয়াচেন ঘিরে ভারতের নতুন পরিকল্পনা।

প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, গত দু- আড়াই বছর ধরে সিচায়েনে ইউনিফর্ম লঞ্চিং প্যাড তৈরির প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী চার থেকে পাঁচ বছরে টার্গেট সেট হতে পারে। আবার গোটা প্রকল্পটা ব্যর্থও হতে পারে। লঞ্চিং প্যাড তৈরি হয়ে যাবে। তবে ওই উচ্চতা বা আবহাওয়ায় সঙ্গে মিসাইলের খাপ খাইয়ে নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। সেজন্য মিসাইলের ডিজাইন ও হার্ডওয়ার – সফটওয়ারের বেশ কিছু পরিবর্তন করতে হবে। তবে সাফল্য আসুক বা ব্যর্থতা – চেষ্টা চলবেই। কেন? কেননা, লক্ষ্যপূরণ হলে যে কোনও ভৌগলিক পরিস্থিতি থেকে মিসাইল লঞ্চের প্রযুক্তি ভারতের হাতে উঠবে। এবং ভারতই হয়ত প্রথম দেশ হিসাবে সেই বিরল সাফল্যের অংশীদার হবে। সিয়াচেনের গড় দিনে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি। রাতে মাইনাস ৪২ ডিগ্রি। সঙ্গে সারা বছর হাড়হিম করা ঠান্ডা হাওয়া। বিন্দুমাত্র অসতর্ক হলে বা গ্লাভস থেকে আঙুল বেরিয়ে গেলে আঙুল কাটা পড়ার সম্ভানা। এটাই সিচায়েন।

বোঝাই যাচ্ছে, কেন এখানে লঞ্চিং প্যাড তৈরি কিছুদিন আগেও অলীক কল্পনা বলে মনে করা হত। আবহবিদদের অনেকেই একে তৃতীয় মেরু বলে বলে ডাকেন। ১৯৮৪ সাল থেকে দিন-রাত, তিনশো পঁয়ষট্টি দিন এখানে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে ভারতীয় সেনা। ১৮ হাজার ফুট উপরে সেনার বেস-ক্যাম্প। পশ্চিমে দুর্গম সালতারো রিজ, পূর্বে ভয়ঙ্কর খাড়াই কারাকোরাম এবং উত্তরে সবচেয়ে খাড়াই কারমান কানেক্ট – সব জায়গায় পাহারায় ভারতীয় সেনা। সিয়াচেনকে ঘিরে পাকিস্তান ও চিন। এদের তুলনায় ভারতীয় সেনা অনেকটা উঁচুতে বসে। তাই বারবার চেষ্টা করেও ভারতীয় সেনাকে তাঁরা কাবু করতে পারেনি। মনে করে দেখুন, কার্গিল যুদ্ধের প্রথমেও একই রকম ভৌগলিক সুবিধা পেয়েছিল পাক হানাদারেরা। সিয়াচেনের আরেক নাম বুনো গোলাপ। ১৯৮৪ সালে এক দুঃসাহসী অভিযান চালিয়ে সিয়াচেনে পা রাখে ভারতীয় সেনা। সেটাই অপারেশন মেঘদূত। দিনটা ছিল ১৩ এপ্রিল।