নয়া দিল্লি : ২২ দিনে পড়ল ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান। তবুও ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বন্ধের কোনও ইঙ্গিত নেই। গতকাল আন্তর্জাতিক আদালতের তরফে রাশিয়াকে সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরও রুশ বাহিনীর হামলা চলছে। এদিকে ইউক্রেনও যুঝে চলছে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সামনে। হার মানতে নারাজ তাঁরা। ইউক্রেন-রাশিয়ার এমত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে আটকে পড়েছিলেন বহু নাগরিক। কেন্দ্রের সরকার ‘অপারেশন গঙ্গার’ মাধ্য়মে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার ভারতীয় নাগরিককে ইতিমধ্যে দেশে ফিরিয়েও এনেছে। কিন্তু যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে এখনও আটকে রয়েছেন ৫০ জন ভারতীয় নাগরিক। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেই একথা জানানো হয়েছে। তাঁরা এখন উদ্ধারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। সরকারের তাঁদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন যে, ‘অপারেশন গঙ্গার’ অধীনে বিমান যাতায়াত এখনও বন্ধ হয়ে যায়নি।
এদিন কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা ইউক্রেনে আটকে থাকা মানুষদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করছি। কিছু লোক এখনও খেরসনে আছে। অপারেশন গঙ্গা শেষ হয়নি এবং যাঁরা ফিরে আসতে চান তাঁদের আমরা সাহায্য করছি।” এখনও অবধি প্রায় প্রায় সাড়ে ২২ হাজার ভারতীয় নাগরিককে ইতিমধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিছুদিন আগেই সংসদের অধিবেশনে একথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগে থেকেই সেখানে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরে আসার জন্য বিভিন্ন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল কেন্দ্র এবং কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে। তারপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রুশ মিসাইল হামলায় ইউক্রেনের এয়ারস্পেস বন্ধ হয়ে যায়। বাধার সম্মুখীন হয় রাশিয়া। এই অবস্থাতাতেও ‘অপারেশন গঙ্গা’ শুরু করে ভারত। কাজে লাগানো হয় বায়ুসেনার সি-১৭ বিমানও। ঘুর পথে ইউক্রেনেরে সীমান্তবর্তী দেশ হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া এবং পোল্যান্ড দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয় ভারতীয়দের।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী রাশিয়ার সীমান্তবর্তী পূর্ব ইউক্রেনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল। এই এলাকা এখন পর্যন্ত সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তিনি বলেছেন যে সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ইউক্রেনে থাকা পড়ুয়াদের একটি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ইউক্রেনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল সংসদে এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, ছাত্রদের একটি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউক্রেনে থেকে গিয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের অবশ্যই তাদের দুর্দশা বুঝতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে আসার একটি স্বাভাবিক অনিহা ছিল। কারণ এতে তাঁদের পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয়ভাবে নিরুৎসাহিত করেছিল এবং অনলাইন কোর্স অফার করতে অনিচ্ছা দেখিয়েছিল।”
আরও পড়ুন : Elon Musk: সোশ্যাল মিডিয়ায় এলন মাস্ককে সমর্থন করেছিলেন, তারপরই রাতারাতি বদলে গেল যুবকের জীবন…