Pakistan’s Military: যুদ্ধের আবহে ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিতে পাক সেনার ভাঁড়ারে কী কী অস্ত্র?
Pakistan's Military: ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনেক হাঁকডাক-ই তো শোনা যাচ্ছে পাক সেনাকর্তাদের গলায়। কিন্তু ভাঁড়ে মা ভবানী। আসলে অধিকাংশ অস্ত্রই হয় পরীক্ষা করে দেখা হয়নি কোনওদিন বা কোনওটা চালানোর মতো দক্ষ সেনা নেই।

যুদ্ধ অনিবার্য! সময় লাগতে পারে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা বড়জোর। বক্তব্য খোদ পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। ভারতও হুঙ্কার দিয়েই রেখেছে, পহেলগাঁওয়ে নারকীয় হত্যালীলার বদলা নেওয়া হবেই। সেনাকে ওপেন হ্যান্ড দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের এই হুঙ্কারের পরেই পাক সেনার অন্দরে কার্যত ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। যুদ্ধ অনিবার্য জেনে আকাশ থেকে মাটি– একে একে সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে LoC-র দিকে এগোচ্ছে পাক সেনা। প্রস্তুত ভারতও।
প্রথমেই আসা যাক আকাশপথে পাক সেনার প্রস্তুতিতে। ইতিমধ্যেই ইসলামাবাদে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব বাণিজ্যিক এয়ারস্পেস। উড়ছে না কোনও যাত্রীবাহী বিমান। হাই অ্যালার্ট করাচিতেও। ভারতের প্রত্যাঘাত ঠেকাতে তিনদিনের যুদ্ধ সেরে নিচ্ছে পাক বায়ুসেনা, যার পোশাকি নাম জার্ব-এ-হায়দারি। সাদার্ন এয়ার কমান্ডের অধীনে চলছে তিনদিনের এই যুদ্ধ মহড়া। চিনের দাক্ষিণ্যে পাওয়া JF-17 থান্ডার ও আমেরিকার সৌজন্যে F-16 ফাইটার ফ্যালকন উড়ছে পাকিস্তানের এয়ারস্পেসে। কয়েকটি পুরনো মিরাজ ৩ ও ৪-ও রয়েছে তবে সংখ্যায় ভারতের চেয়ে অনেক কম। এছাড়াও পাক বায়ুসেনার কাছে AH-1 Cobra helicopters ও কয়েকটি Airborne Early Warning and Control (AEW&C) Systems এয়ারক্রাফটও রয়েছে। AEW&C আসলে এক ধরণের এয়ারবোর্ন রেডার সিস্টেম। পাক সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া এয়ারক্রাফট, মিসাইল, রণতরী চিহ্নিত করতে কাজে লাগে।
এই খবরটিও পড়ুন
এবার মাটিতে/জমিতে যুদ্ধের প্রস্তুতির দিকে নজর রাখা যাক!
ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখার (LoC) আরও কাছে চিনের দেওয়া এসএইচ ১৫৫ এমএম সেলফ প্রপেলড হাউৎজারস (SH-15 155mm self-propelled howitzers) এগিয়ে আনছে পাক সেনাবাহিনী। এই প্রতিবেদন লেখার মুহূর্তে ভারত-পাক সীমান্ত থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে PCL-181 (এই নামেই ডাকে চিনা সেনা)। স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন ভারতের গোয়েন্দারা। সেই মতোই ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারতও। পাহাড়ি এলাকায় যুদ্ধে বিশেষভাবে পারদর্শী এই ১৫৫ এমএম /৫২ ক্যালিবারের আগ্নেয়াস্ত্র। ২০১৭-চিনে উৎপাদিত এই কামান পাকিস্তানকে দেওয়া হয় ২০১৯-এ। চুক্তি মোতাবেক ২৩৬টি এরকম কামান পায় ইসলামাবাদ। হাউৎজার ৫৩ কিলোমিটার পর্যন্ত গুলি ছুঁড়তে পারে। কম্পিউটারাইজড ফায়ারিং কন্ট্রোল সিস্টেম, জিপিএস ন্যাভিগেশন, সেমি অটোমেটিক লোডিং ও প্রতি মিনিটে ৪-৬ রাউন্ড ফায়ারিংয়ের ক্ষমতার জন্য পাক সেনার বিশেষ পছন্দের এই কামান। এছাড়া আল খালিদ, আল জারর-এর মতো পাকিস্তানে তৈরি ব্যাটল ট্যাঙ্ক ও টাইপ ৬৯ ও টাইপ ৮৫-এর মতো কয়েকটি পুরনো ট্যাঙ্কও রয়েছে ইসলামাবাদের ভাঁড়ারে। কিন্তু সবমিলিয়ে পাক ট্যাঙ্ক, আর্টিলারি, এটিজিএম বা Anti-Tank Guided Missiles (ATGMs) ও সেনার সাঁজোয়া গাড়ির সংখ্যাও ভারতের চেয়ে ঢের কম।
পাক নৌসেনার প্রস্তুতিতে নজর রাখা যাক। পাকিস্তানের কাছে অগ্যস্ত ক্লাস (Agosta-class submarines) ও চিনা য়ুয়ান ক্লাস ( Chinese Yuan-class submarines) সাবমেরিন রয়েছে। সারফেস কমব্যাট শিপ, ছোট কর্ভেট, মাইন্ খুঁজতে পারে এমন ছোট ভেসেল বা নৌকা থাকলেও সংখ্যায় ও দক্ষতায় অনেকটাই পিছিয়ে।
ব্যালিস্টিক মিসাইলের তালিকায় পাক সেনার ভাঁড়ারে শাহিন সিরিজের (Shaheen series) ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেও সেগুলির পাল্লা অনেকটাই কম। শাহিন ৩ সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ২৭৫০ কিলোমিটার উড়তে পারে। ভারতের কাছে এমন ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যার পাল্লা ১০,০০০ কিলোমিটার। ‘বাবর’ নামের ক্রুজ মিসাইল পাক সেনার একমাত্র ভরসা। রাড ২ এর মতো Air-Launched Cruise Missiles (ALCMs) ও ঘাউরি সিরিজের স্বল্প পাল্লার মিসাইল থাকলেও সেগুলির কার্যকারীতা এখনও পরীক্ষিত নয়।
সবশেষে পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডারে নজর দেওয়া যাক। সূত্রের খবর পাকিস্তানের ভাঁড়ারে ১২০-১৩৫টি নিউক্লিয়ার বোমা থাকতে পারে।
এই হল মোটামুটি পাক সেনার ভাঁড়ারের দশা। উপরের তালিকার মধ্যে প্রায় সবকটি অস্ত্রই হয় চিনের কাছ থেকে ভিক্ষায় পাওয়া নচেৎ আমেরিকার কাছ থেকে। প্রায় কোনওটিরই দক্ষতা/ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। তাই আসল যুদ্ধে এগুলি কতটা কাজে আসবে, এ বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে খোদ পাক সেনাকর্তাদেরই।
অন্যদিকে ভারতের সেনা টগবগ করে ফুটছে প্রত্যাঘাতের জন্য। একজন জঙ্গিকেও রেয়াত করা হবে না বলে, বার্তা দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। সোম, মঙ্গল ও বুধবারও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বিশেষ বৈঠক সেনাকর্তাদের সঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, ওই বৈঠক থেকে প্রত্যাঘাতের দিনক্ষণ ও কীভাবে প্রত্যাঘাত সেটা স্থির হবে।





