J&K Blast: ‘পাপা যেও না’, বারবার বলেছিল মেয়ে, থানায় সেলাই করতে গিয়ে প্রাণ গেল শফির

J&K Police Station Blast: নিহত মহম্মদ শফির এক আত্মীয় জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বিস্ফোরক ভরা ব্য়াগগুলির মুখ সেলাই করতে। সকাল থেকেই তিনি থানায় ছিলেন। দুপুরে শুধু নমাজ পড়তে এসেছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ রাতের খাবার খেতে আসলে, শফির মেয়ে বায়না ধরেছিল যে সে যেন আর থানায় না যান।

J&K Blast: পাপা যেও না, বারবার বলেছিল মেয়ে, থানায় সেলাই করতে গিয়ে প্রাণ গেল শফির
বিস্ফোরণের পর জ্বলছে থানা।Image Credit source: X

|

Nov 16, 2025 | 10:55 AM

শ্রীনগর: ছোট্ট মেয়েটা জেদ করছিল, বারবার বলছিল, “পাপা যেও না”। মাথায় হাত বুলিয়ে বাবা আশ্বস্ত করেছিল যে কাজ শেষ করেই বাড়ি চলে আসবেন। পথ চেয়ে বসে রয়েছে মেয়ে, বাড়ি ফেরা হল না বাবার। জম্মু-কাশ্মীরের নওগাম পুলিশ স্টেশনের বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অতি সাধারণ টেলর বা দর্জি, মহম্মদ শফিও। বাড়ির লোকের আক্ষেপ, মেয়ের কথা যদি শুনতেন শফি, তাহলে বেঘোরে প্রাণ দিতে হত না।

শুক্রবার রাতে নওগাম থানায় বিস্ফোরকের নমুনা সংগ্রহ  করা হচ্ছিল। সেই সময়ই হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়। জোরাল ওই বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৯ জন। আহত কমপক্ষে ৩০ জন। হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিল ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক। রাস্তায়  বা হরিয়ানার বাড়িতে বিস্ফোরণ না হলেও, শুধুমাত্র নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে কী করে বিস্ফোরণ হল, উঠছে প্রশ্ন। যদিও এই বিস্ফোরণকে নাশকতা বলছে না কেন্দ্র।

নিহত মহম্মদ শফির এক আত্মীয় জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বিস্ফোরক ভরা ব্য়াগগুলির মুখ সেলাই করতে। সকাল থেকেই তিনি থানায় ছিলেন। দুপুরে শুধু নমাজ পড়তে এসেছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ রাতের খাবার খেতে আসলে, শফির মেয়ে বায়না ধরেছিল যে সে যেন আর থানায় না যান। শফি বলেছিলেন, “আমি যাব, কাজ শেষ করেই চলে আসব”। এটাই শফির শেষ কথা ছিল। তখন কেউ বোঝেননি যে আর কখনও ফেরা হবে না তাঁর।

শফির খুড়তুতো ভাই মহম্মদ সাফি শেখ বলেন, “রাতে আমরা খুব জোরে বিস্ফোরণের শব্দ পাই। ছুটে যাই থানায়। দেখি, গোটা থানাটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে।”

ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোঁজার পর হাসপাতালের এক কোণে শফির দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে আত্মীয়রা এখনও শফির মৃত্যুর কথা তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে জানাতে পারছেন না। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শফি একমাত্র উপার্জন করত। যদি পুলিশে চাকরি করত, তাহলে হয়তো পরিবারকে আয় নিয়ে চিন্তা করতে হত না। তাদের প্রশ্ন, পুলিশে যদি প্লাম্বার ও অন্যান্য কাজের লোক থাকে, তাহলে দর্জি নেই কেন? শফি পুলিশকে সাহায্য করতে গিয়েছিল। এখন তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে সরকার কি সাহায্য করবে?

এই বিস্ফোরণের পর স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন যে থানাকে যেন লোকালয় থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা ঘটলে, সাধারণ মানুষকে তার ফল ভোগ করতে না হয়। অন্যদিকে, জঙ্গি যোগে চিকিৎসকদের গ্রেফতারি নিয়েও বলেছেন, “এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। আরও বড় বড় মাথা জড়িত রয়েছে। যতদিন না দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে, কিছুই বদলাবে না।”

প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।