
শ্রীনগর: পাকিস্তান যা-ই বলুক, পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় পাক যোগ স্পষ্ট। হামলাকারী এক জঙ্গি আদিল আহমেদ ঠোকার, যে অনন্তনাগের বিজবেহরার বাসিন্দা, তার পাকিস্তানি যোগ মিলল সামনে। জানা গেল, ২০১৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় পাকিস্তানে গিয়েছিল আদিল। ৬ বছর বাদে ৩-৪ জন জঙ্গির সঙ্গে ভারতে ফেরে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আদিলই সম্ভবত পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার মূল চক্রী ছিল। এি হামলার পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই করা হচ্ছিল। ২০১৮ সালে আদিল আহমেদ ঠোকর স্টুডেন্ট ভিসায় পাকিস্তান গিয়েছিল। তবে তাঁর মগজ ধোলাই অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিল। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল।
পাকিস্তানে গিয়ে কার্যত সকলের চোখের আড়ালে চলে যান আদিল। এমনকী পরিবারের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ রাখতেন না। প্রায় ৮ মাস নিখোঁজ ছিলেন আদিল। গোয়েন্দারাও তাঁর কোনও হদিস পাননি। সূত্রের খবর, ওই সময়ে পাকিস্তানে প্যারামিলিটারি ট্রেনিং চলছিল আদিলের। লস্কর-ই-তৈবার সহযোগী হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে নিয়ন্ত্রণ রেখা পার করে পুঞ্চ-রাজৌরি সেক্টর দিয়ে ফের ভারতে প্রবেশ করে। খাড়া পাহাড়, গভীর জঙ্গলের কারণে এই অঞ্চলে নজরদারি করা কঠিন। আর সেই সুযোগ লাগিয়েই জঙ্গিরা অনুপ্রবেশ করে।
আদিলের সঙ্গে আরও তিন-চারজন এসেছিল, যার মধ্যে একজন পাকিস্তানিও ছিল। তাঁর নাম হাশিম মুসা। এই হাশিমই সুলেমান নামে পরিচিত। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় জড়িত সুলেমানও। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, মুসার ভারতে ঢোকার রাস্তা করে দিয়েছিল এই আদিলই।
ভারতে আসার পর বেশ কিছুদিন আড়ালে ছিল আদিল। কিস্তওয়ার দিয়ে অনন্তনাগে আসে সে। অনন্তনাগে এসে সে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায়। ওখানে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়েছিল আদিল। ভারতে এসে জঙ্গি সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর বেশ কিছুদিন ধরে উপযুক্ত সময় ও জায়গা খুঁজছিল হামলা চালানোর জন্য।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আদিলদের লক্ষ্যই ছিল এমন জায়গায় হামলা চালানো, যেখানে ব্যাপক প্রাণহানি হবে এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজর টানবে। অমরনাথ যাত্রা শেষ হওয়ার পর, গত মার্চ থেকেই বৈসরনে পর্যটকদের ভিড় হচ্ছিল। যেহেতু বৈসরনে কোনও সেনা বা পুলিশ ক্যাম্প ছিল না, তাই জঙ্গি হামলার আদর্শ জায়গা ছিল এটা। সেই পরিকল্পনাকেই বাস্তবের রূপ দেয় ২২ এপ্রিল। ধর্ম জেনে হত্যা করা হয় ২৬ হিন্দু পর্যটককে।