রাঁচি : উদ্ধব ঠাকরেরা আগেই মুখ ঘুরিয়েছিলেন। এবার কি পড়শি হেমন্ত সোরেনও? একক অস্তিত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নেমে ক্রমেই কি বন্ধু হারাচ্ছেন মমতা? কারণ, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাও জানিয়ে দিয়েছে, তৃণমূলের থেকে কংগ্রেসকেই তাঁরা বেশি পছন্দ করবেন। আসন্ন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল-সোনিয়াদের সঙ্গেই থাকবেন হেমন্ত সোরেন।
ঝাড়খণ্ডে ইউপিএর সবথেকে শক্তিধর দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। কংগ্রেস এবং আরজেডির সঙ্গে জোট বেঁধে পড়শি রাজ্যে সরকার চালাচ্ছেন সোরেন। সদ্য সমাপ্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি। বাংলার আদিবাসী অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলি প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অন্যদিকে কংগ্রেস আবার বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়েছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এখন ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে মমতা যে সমান্তরাল বোঝাপড়ার কথা বলছেন, তাতে খুব একটা আগ্রহী নয় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী মুখ হিসাবে তুলে ধরার আকুল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর জন্য অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে নতুন করে সমীকরণ তৈরির চেষ্টা করছেন। তবে হেমন্ত সোরেনের দল খুব সম্ভবত পৃথকভাবে তাঁর পাশে থাকছে না। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের পাশেই থাকবে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র সুপ্রিয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “আমরা এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল সরকার চালাচ্ছি। আমরা গত দুটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছ। 2019 সালের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে একসঙ্গে। আমি ২০২৪ সালে এখানেও সেই সমীকরণের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি না।”
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরিবর্তে মমতার দলকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন,”প্রতিবেশী রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দেওয়ার একমাত্র লক্ষ্যে মমতাকে সমর্থন করা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনেও একই হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে বিতাড়িত করতে চাই। তার উপর, পশ্চিমবঙ্গের মতো, ঝাড়খণ্ডে তৃণমূলের কোনও সাংগঠনিক শক্তিও নেই। এদিকে, কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের একটি স্থিতিশীল জোট রয়েছে, যা বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি।”
উল্লেখ্য, বিজেপি বিরোধী ঐক্যে শান দিতে কিছুদিন আগেই মুম্বই গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। এমনকী শরদ পাওয়ারকে পাশে নিয়ে ইউপিএ জোটকেও অস্বীকার করেছেন। সেই দৃশ্য দেখার পর, অনেকেই মনে করছিলেন, তাহলে কি এবার বিরোধী জোটের স্টিয়ারিং কংগ্রেস নয়, বরং মমতার হাতেই থাকছে। কিন্তু সেই সব চিন্তা ভাবনায় একেবারে জল ঢেলে দিয়েছে শিবসেনা। শিবসেনার মুখপত্র সামনায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনওভাবেই বিরোধী জোট করা যাবে না।