বেঙ্গালুরু: অবশেষে হার মানলেন ইয়েদুরাপ্পা (BS Yediyurappa)। দীর্ঘ জল্পনার পর সোমবার সকালে তিনি নিজেই ঘোষণা করলেন যে কর্নাটক(Karnataka)-র মুখ্যমন্ত্রী পদ (Chief Minister Post) থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। এ দিনই তাঁর সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান রয়েছে। তার আগেই ভেঙে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। তিনি বলেন, ” আজ মধ্যাহ্নভোজের পরই আমি ইস্তফা দেব।”
দলের অন্দরে মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাকে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরেই। একাধিকবার দলের সাংসদ-বিধায়করা তাঁর ইস্তফার দাবি করেছিলেন। কিন্তু সে সব দাবিতে আমল করেননি ৭৮ বছর বয়সী ইয়েদুরাপ্পা। তবে সেই মনোভাবেই পরিবর্তন আসে এ মাসেই। দু’সপ্তাহ আগেই আচমকাই এক শুক্রবার চাটার্ড ফ্লাইটে চেপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি, সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলেও। সেই বৈঠকেই তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করার কথা জানান। যদিও বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, এই কথাগুলির কোনওটাই সত্যি নয়।
তবে বিগত কয়েকদিন ধরেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে বা টুইটারেও মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। গত বুধবারই তিনি টুইটে লেখেন, “বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী হতে পারার সুযোগ পেয়েছি আমি। আমার কাছে এটি গর্বের বিষয় যে নীতি ও সুব্যবহার বজায় রেখেই দলের সেবা করে গিয়েছি। আমি সকলের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যেন দলের নীতি মেনে চলেন এবং কোনও ধরনের আন্দোলন বা অব্যবস্থার সৃষ্টি না করেন, যা দলের কাছে লজ্জাজনক ও অবমাননাকর হয়ে দাঁড়াবে।”
গতকালও বেলাগাভিতে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী ফের একবার তাঁর পদত্যাগের জল্পনাকেই উসকে দেন। তিনি বলেন, “যদি আজ বিকেলের মধ্যে কোনও বার্তা আসে, তবে আমি সঙ্গে সঙ্গে জানাব।” পরে বিকেলে তিনি জানান, এখনও কোনও বার্তা আসেনি শীর্ষমহল থেকে। তবে এক রাতের মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদলে তাঁর নেতৃত্বাধীনে সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানেই তিনি পদত্যাগ করার ঘোষণা করেন।
এ দিন তিনি কান্না ভেজা চোখে বলেন, “আজ মধ্যাহ্নভোজের পরই আমি পদত্যাগ করব।” প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যখন অটল বিহারী বাজপেয়ীজী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি আমাকে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম যে আমি কর্নাটকেই ভাল আছি।”
ইয়েদুরাপ্পা জানান, গত দুই বছর করোনা সংক্রমণের কারণে রাজ্য় পরিচালন করা তাঁর কাছে অগ্নিপরীক্ষার সমান ছিল।
Sarvodaya through Antyodaya has been the guiding philosophy of our party. In the last 50 years, upliftment of poor, oppressed, backward communities, senior citizens, women and children has been my priority and I dedicated myself to bring positive changes in the lives of people.
— B.S. Yediyurappa (@BSYBJP) July 26, 2021
এ দিন সকালেই মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা টুইট করে বলেন, “অন্তোর্দ্যয়ের মধ্যে দিয়ে সর্বোদয় করাই আমাদের দলের নীতি। বিগত ৫০ বছর ধরে গরীব, পিছিয়ে পড়া শ্রেণি, প্রবীণ নাগরিক, মহিলা ও শিশুদের তুলে ধরাই আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল এবং সাধারণ মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার উদ্দেশ্যেই আমার জীবন উৎসর্গ করছি।”
Our tallest leaders, starting from Pt Deen Dayal Upadhyayaji, Syama Prasad Mookerjee, Atalji, Advaniji, Murali Manohar Joshiji have inspired me to dedicate myself to serve the nation. I have also received immense love and support of Modiji, Amit Shahji and Naddaji.
— B.S. Yediyurappa (@BSYBJP) July 26, 2021
অপর একটি টুইটে তিনি দেশসেবায় নিযুক্ত হওয়ার জন্য কারা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, সে বিষয়ে কথা বলেন। তিনি লেখেন, “আমাদের শীর্ষ নেতারা, পণ্ডিত দীনদয়াল উপাদ্যায় থেকে শুরু করে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, অটলজী, আদবাণীজী, মুরলী মনোহর জোশীজী আমায় বরাবর অনুপ্রাণিত করেছেন দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োগ করার জন্য। আমি মোদীজী, অমিত শাহজী ও জেপি নাড্জাজীর থেকেও অফুরাণ ভালবাসা ও সমর্থন পেয়েছি।” আরও পড়ুন: ‘কৃষকদের বার্তা সংসদে নিয়ে এলাম’, ট্রাক্টরের চালকাসনে রাহুল, সংসদে ঢুকেই আইন প্রত্যাহারের দাবি