কোমর সমান জলেও পরোয়া নেই, এক ফোনেই নদী টপকে আদিবাসীদের কাছে পৌঁছলেন কেরলের স্বাস্থ্যকর্মীরা

ভবানী নদী অবধি গাড়ি গেলেও বাকি কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটেই যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। ভবানী নদীতে জলস্তর বেশি থাকায় প্রথমে ভয় পেলেও পরে একে অপরের হাত ধরে কোনও মতে নদী পার করেন তাঁরা।

কোমর সমান জলেও পরোয়া নেই, এক ফোনেই নদী টপকে আদিবাসীদের কাছে পৌঁছলেন কেরলের স্বাস্থ্যকর্মীরা
ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
Follow Us:
| Updated on: May 23, 2021 | 8:41 AM

তিরুবনন্তপুরম: নিত্যদিনের মতোই করোনা সংক্রান্ত নানা সাহায্য চেয়ে ফোন পাচ্ছিলেন কেরলের ত্রিশুরের পুথুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। শুক্রবার আচমকাই একটি ফোন আসে পালাক্কাড জেলার আট্টাপাডি জঙ্গলের মধ্যে বসবাসকারী একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে। সাতজনের জ্বর শুনেই ছুটে যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু যাত্রাপথ অত সহজ নয়, ভবানী নদীর তীরে গাড়ি পৌঁছলেও বাকি রাস্তা হেঁটেই যেতে হবে। সেই মতোই বাধা পেরিয়েই নদী টপকে জঙ্গলে বসবাসকারী আদিবাসীদের কাছে পৌঁছে গেলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ।

আট্টাপাডি জঙ্গলেই বসবাস করেন মুরুগুলা নামক একটি আদিবাসী জনজাতি। মোট সাতটি পরিবার মিলিয়ে ৪০ জনের বসবাস সেখানে। শুক্রবার আচমকাই সেখান থেকে ফোন করে জানানো হয়, সাতজনের প্রচন্ড জ্বর। স্বাস্থ্যকর্মীরা যেন একবার এসে দেখে যান। সেদিন বিকেল হয়ে যাওয়ায় শনিবার দেরী না করে সকালেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন চার সদস্যের মেডিক্যাল টিম। এই দলে ছিলেন ডঃ সুকন্যা, স্বাস্থ্য আদিকারিক সুনীল ভাসু, জুনিয়র স্বাস্থ্য ইন্সপেকটর সাইজু ও গাড়ি চালক সাজেশ।

ভবানী নদী অবধি গাড়ি গেলেও বাকি কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটেই যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। ভবানী নদীতে জলস্তর বেশি থাকায় প্রথমে ভয় পেলেও পরে একে অপরের হাত ধরে কোনও মতে নদী পার করেন তাঁরা। এরপর প্রায় দুই কিলোমিটার পথ ট্রেক করে ওই জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছন তাঁরা।

সেখানে ৩০ জন বাসিন্দার করোনা পরীক্ষা করা হলে সাতজনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। আক্রান্তদের পুথুর ডোমিসিলিয়ারি কেয়ার সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাকিদেরও আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে।

গোটা ঘটনাটি জানতে পেরেই চিকিৎসক সুকন্যাকে ফোন করেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। এই বিষয়ে সুকন্যা বলেন, “প্রতি মাসেই স্বাস্থ্য ক্যাম্পের জন্য ওখানে যাই আমরা। এবার নদীতে জলস্তর বেশি থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছিল। কয়েকজন নদীতে পড়েও গিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রীর ফোন পাব, এটি আশাতীত ছিল। উনি আমাদের সকলের প্রশংসা করেছেন।”