তিরুবনন্তপুরম: একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে করোনা টিকা নেওয়ার পরদিনই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল স্নাতকোত্তর পড়ুয়া। জ্বর, মাথা ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরই মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। করোনা টিকা নেওয়ার পরই মৃত্যু হওয়ায় টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইল অভিভাবকেরা। শুক্রবারই তারা কেরল হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তাদের দাবি, মেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার তৈরি করোনা টিকা কোভিশিল্ড নেওয়ার পরই তাদের মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মৃত্যু হয়। সেই কারণেই তারা সেরাম সংস্থার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। একইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যকেও তাদের মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
জানা গিয়েছে, সাবু সি থমাস ও তাঁর স্ত্রী জিন জর্জ কেরলের পাথানামিত্থা জেলার বাসিন্দা। তাদের কন্যা নোভা সাবু সাহিত্য নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছিলেন। ২০২১ সালের অগস্ট মাসের শুরুতে কোচির একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নোভা কোভিশিল্ডের টিকা নেয়। টিকা নেওয়ার পরের দিনই হঠাৎ সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ায় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফের অপর একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ধীরে ধীরে ওই তরুণীর অবস্থার আরও অবনতি হয়। মাথা ব্যাথার পাশাপাশি বমি, শ্বাসকষ্টও শুরু হয়। সাড়া দেওয়ার ক্ষমতাও হারায় সে, একদিনের মধ্যেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে ওই তরুণী। এরপরে তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়। গতবছরের ১২ অগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রথমে ওই মৃতা তরুণীর মা-বাবা মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানান। ক্ষতিপূরণের দাবি জানানোয় পাথানামিত্থা জেলার মেডিক্যাল অফিসার তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে জানা যায়, নোভা নামক ওই তরুণীর আগে কোনও স্নায়ুর সমস্যা ছিল না। কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরই এই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নোভা হয়তো থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া নামক একধরনের থ্রম্বোসিস সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ব্রিটেনের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ২ কোটি টিকাপ্রাপকের মধ্যে একজনের এই ধরনের উপসর্গ দেখা যায়।
মামলাকারীদের দাবি, কোভিশিল্ড নেওয়ার পরই তাদের কন্যার মৃত্যু হয়েছে। এরজন্য সরকার ও সেরাম সংস্থাকে দাবি করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তারা।
আরও পড়ুন: XE Variant: XE ভ্যারিয়েন্টেই আক্রান্ত গুজরাটের বাসিন্দা! কী ধরনের উপসর্গ ছিল, জানাল প্রশাসন