Bengaluru: লাগবে ২৮০০ কোটি টাকা, না-হলে বন্যায় ডুবে যাবে ভারতের এই বড় শহর

Knight Frank report on Bengaluru flood: একটা সময় বহু জলাশয় এবং বৃষ্টির জল যাওয়ার নালার কারণে, এই বেঙ্গালুরু শহরই পরিচিত ছিল 'হ্রদের শহর' হিসেবে।

Bengaluru: লাগবে ২৮০০ কোটি টাকা, না-হলে বন্যায় ডুবে যাবে ভারতের এই বড় শহর
সামান্য বৃষ্টিতেই বেঙ্গালুরু শহরের ছবিটা দাঁড়ায় এই রকম (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 01, 2023 | 6:04 PM

বেঙ্গালুরু: গত কয়েক বছরে সামান্য বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যাওয়া এবং বন্যা বেঙ্গালুরু শহরের গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে। গত মাসেই, মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়ে, সেই জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ২২ বছরের এক যুবতীর। গত বছর, ‘ভারতের সিলিকন ভ্যালি’তে তাবড় আইটি সংস্থার বড়কর্তাদের বাড়ি-গাড়ি বন্যার জলের নীচে চলে যেতে দেখা গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির জল বের হওয়ার জায়গা পাচ্ছে না। সেই কারণেই শহরের একপ্রান্তে সামান্য বৃষ্টি হলেও বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে শহরে। অথচ, একটা সময় বহু জলাশয় এবং বৃষ্টির জল যাওয়ার নালার কারণে, এই বেঙ্গালুরু শহরই পরিচিত ছিল ‘হ্রদের শহর’ হিসেবে। কোথায় গেল সেই সব জলাশয়? নালা? ব্যাপক মাত্রায় দখলদারি এবং অবৈধ নির্মাণের কারণে বৃষ্টির জল যাওয়ার এই সকল জলাশয়-নালা উধাও হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বেঙ্গালুরুকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে অন্তত ৬৫৮ কিলোমিটার নতুন নালা তৈরি করতে হবে বলে দাবি করা হল এক রিপোর্টে। যার জন্য প্রয়োজন ২৮০০ কোটি টাকা!

‘বেঙ্গালুরু আরবান ফ্লাড’ নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে গ্লোবাল প্রপার্টি কনসালটেন্সি ফার্ম, নাইট ফ্র্যাঙ্ক। বেঙ্গালুরুতে ঘন ঘন বন্যা হওয়া নিয়ে, আইআইএসসি (IISc)-সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুই মাস ধরে গবেষণা করেছে তারা। গবেষণার রিপোর্টটি প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, বেঙ্গালুরুর ঘন ঘন বন্যা হওয়ার সমস্যার সমাধানে ২৮০০ কোটি টাকা লাগবে। কারণ বৃষ্টির জল যাতে শহরে দাঁড়িয়ে না যায়, তার জন্য জল নিষ্কাশন ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের প্রয়োজন। বর্তমানে বেঙ্গালুরু পুর এলাকায় ৬৩৩টি স্টর্মওয়াটার ড্রেন রয়েছে, দৈর্ঘ্য প্রায় ৮৪২ কিলোমিটার। কিন্তু, এটা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছে নাইট ফ্র্যাঙ্ক। তাদের মতে, বেঙ্গালুরুর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রয়োজন মেটাতে বিদ্যমান নালাগুলির সংস্কারের পাশাপাশি প্রায় ৬৫৮ কিলোমিটার নালা নির্মাণ করতে হবে।

এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, যত দিন গিয়েছে ততই বেঙ্গালুরু শহরের জনসংখ্যা বেড়েছে। শহরাঞ্চলের এলাকা বেড়েছে। কিন্তু, সেই তুলনায় কমেছে জলাশয় এবং নালার পরিমাণ। গত শতাব্দীর নয়ের দশকে কোরমঙ্গল উপত্যকায় ১১৩.২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নালা ছিল। এখন তার পরিমাণ হয়ে গিয়েছে প্রায় অর্ধেক। ২০১৬-১৭ সালে তথ্য অনুযায়ী ৬২.৮ কিলোমিটার। বৃষভাবতী উপত্যকাতেও এই সময়ে বৃষ্টির জল যাওয়ার নালার দৈর্ঘ্য ২২৬.৩ কিলোমিটার থেকে কমে ১১১.৭ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, ১৯৯৫ সালে যেখানে শহরের আয়তন ছিল ২২৬ বর্গকিলোমিটার, ২০১১ সালে বেঙ্গালুরু পুর এলাকার আয়তন বেড়ে হয়েছিল ৭৪১ বর্গকিলোমিটার। এই সময়ে একইভাবে বেড়েছে জনসংখ্যাও। এই সকল পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার যে একদিকে শহর বেড়ে গিয়েছে, জনসংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু, অবনতি হয়েছে নিকাশী ব্যবস্থার।

তাই, এখন বেঙ্গালুরুকে বাঁচাতে গেলে ২৮০০ কোটি টাকার বিপুল খরচের ভার ওঠাতেই হবে। ২০২৩-২৪ সালে এই খাতে কর্নাটক সরকার ৩০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে, ৮০ শতাংশ খরচ হবে নতুন নালা নির্মাণে, বাকি ২০ শতাংশ লাগবে বিদ্যমান নালাগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই রিপোর্টের সুপারিশগুলি ২০৩১ সালের মধ্যেই বাস্তবায়িত করা উটিত। ওই সময়ে বেঙ্গালুরুর জনসংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ৮০ লক্ষ।