লখনউ: গ্রেফতারির ভয়েই এড়িয়েছিলেন প্রথমদিনের সমন (Summon)। শনিবারও পুলিশের সামনে হাজিরা দিয়ে বাহানা করেছিলেন অসুস্থতারষ। কিন্তু তাতে চিড়ে ভিজল না। দীর্ঘক্ষণ জেরার পরই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলে আশীষ মিশ্র (Asish Mishra)।
লখিমপুর কাণ্ডে (Lakhimpur Violence) তাঁর নাম জড়ানোর পরই থেকেই আন্দোলনকারী কৃষক ও বিরোধীরা দাবি করেন, আশীষ মিশ্রকে গ্রেফতার করতে হবে। ঘটনার দিন অর্থাৎ রবিবার যে গাড়িটি কৃষকদের চাপা দিয়েছিল, সেই গাড়িতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলে আশীষ মিশ্র। যদিও মন্ত্রী এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সেইদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না আশীষ। তিনি অন্য একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন, শতাধিক ব্যক্তি তাকে সেখানে দেখেছে।
সোমবারই আশীষ মিশ্র সহ মোট ১৩ জনের নামে এফআইআর দায়ের করে উত্তর প্রদেশ পুলিশ (Uttar Pradesh Police)। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি শুরু হতেই আশীষ মিশ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু শুক্রবার সেই সমন এড়িয়ে যান তিনি। অবশেষে শনিবার দ্বিতীয় নোটিস পেয়ে হাজিরা দিতে আসেন তিনি।
সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় আশীষ দাবি করেছেন যে, তিনি ঘটনাস্থল থেকে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে অনুষ্ঠিত একটি কুস্তি প্রতিযোগিতায় দর্শক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। তবে ওই প্রতিযোগিতায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মী ও দর্শকরা জানিয়েছেন, সেদিন দুপুর ২টো থেকে ৪টে অবধি তিনি অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন না।
এদিকে আশীষ মিশ্রের ফোনের লোকেশন যাচাই করেও দেখা গিয়েছে, ওই নির্দিষ্ট সময়ে তাঁর ফোনটি লখিমপুর খেরি ও তার আশেপাশের এলাকাতেই ছিল। যদিও আশীষ জানিয়েছেন, তিনি ওই সময়ে একটি রাইস মিলে গিয়েছিলেন, যা ঘটনাস্থলের কাছেই ছিল। একই মোবাইল টাওয়ারের অধীনে গোটা এলাকাটি হওয়ায় তাঁকে লখিমপুরে উপস্থিত বলে দেখানো হয়েছে।
পুলিশের জালে মন্ত্রীপুত্র আরও ফেঁসে যান কৃষকদের বিরুদ্ধে তাঁর সতীর্থদের দায়ের করা এফআইআরে। ওই এফআইআরে বলা হয়েছিল, গাড়ির চালক হরি ওম সহ তিন দলীয় কর্মীতে খুন করেছে কৃষকরা। সেখানে জানানো হয়েছিল মহিন্দ্রা থর গাড়িটি চালাচ্ছিলেন হরি ওম, যা কৃষকদের গাড়ি চাপা দেয়। পুলিশের কাছে যে ভিডিয়ো ফুটেজগুলি জমা পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছিল, সাদা শার্ট পড়া একজন গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হরি ওমকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তার পরনে ছিল হলুদ রঙের একটি কুর্তা।
এই তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই পুলিশ আশীষ মিশ্রকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন অসহযোগিতা ও একাধিক প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার কারণেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।