নয়া দিল্লি: গবেষকদের আশা ছিল, ২০২১ সালেই বিদায় নেবে করোনা(COVID-19)। কিন্তু ওমিক্রনের (Omicron) দাপটে ফের একবার দেশ তথা বিশ্বে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। কবে সংক্রমণ থেকে মুক্তি মিলবে, এই প্রশ্নেরই উত্তর যখন সবাই খুঁজছেন, সেই সময় ল্যান্সেট জার্নালে (Lancet Journal) করোনা সংক্রমণ নিয়ে এক নতুন গবেষণা প্রকাশ করা হল। ওই গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, “করোনা সংক্রমণ জারি থাকলেও মহামারির (Pandemic) শেষ পর্যায় আসন্ন।”
ল্যান্সেট জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “ওমিক্রনের বর্তমান ঢেউ কেটে যাওয়ার পর ফের করোনা সংক্রমণ ফেরত আসবে, তবে তা মহামারির রূপ ধারণ করবে না আর। বাকি পাঁচটা সাধারণ রোগে পরিণত হবে করোনা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও সমাজ এই সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তবে করোনা সংক্রমণ রুখতে সরকারকে যে বড় ও কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে আগে, তার প্রয়োজন পড়বে না আর।”
করোনা সংক্রমণ আগামিদিনেও ছড়াতে থাকবে, এ কথা জানিয়ে ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, “করোনা টিকা থেকেই হোক বা সংক্রমিত হওয়ার কারণে, মানবদেহে যে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে, তা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। ফলে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও থেকেই যাবে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণও দেখা দেবে। মূলত শীতকালেই এই সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি থাকবে।”
করোনাভাইরাস পুরোপুরিভাবে বিদায় না নিলেও, এর প্রভাব ধীরে ধীরে কমতে থাকবে বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা। ল্যান্সেট জার্নালে বলা হয়েছে, “ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যের উপর করোনাভাইরাসের প্রভাব অনেকটাই কমে যাবে। অধিকাংশ মানুষই আগে থেকেই সংক্রমিত হওয়ায়, নতুন করে সংক্রমিত হলেও স্বাস্থ্যের উপর তা গুরুতর প্রভাব ফেলবে না। নতুন অ্যান্টিজেন রুখতে ভ্যাকসিন, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের প্রভাব এবং প্রয়োজন অনুযায়ী উচ্চমানের মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সংক্রমণ রোখা সম্ভব হবে।”
ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “যে দেশগুলিতে এখনও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট তেমনভাবে প্রবেশ করেনি, যেমন পূর্ব ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আগামিদিনে ওমিক্রনের ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। করোনা পরীক্ষা করা বা একান্তবাস এই ঢেউকে আটকাতে খুব একটা সফল হবে না। ওমিক্রনের যুগে করোনা সংক্রমণ রোধের পরিকল্পনাগুলিও পুনর্বিবেচনা করা উচিত। ওমিক্রন সংক্রমণের গতি ও সংক্রমণ করার ক্ষমতা দেখেই আন্দাজ করা গিয়েছে যে কন্ট্য়াক্ট ট্রেসিংয়ের মতো পদ্ধতি নির্থক হবে।”