Kerala High Court: পুরুষদের তালাবন্ধ করে রাখুন, মহিলাদের মুক্ত হতে দিন: কেরল হাইকোর্ট

Kerala High Court: যদি ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহিলা হোস্টেলে কারফিউ জারির উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাহলে পুরুষদেরই তালাবদ্ধ করে রাখা উচিত। বলল কেরল হাইকোর্ট।

Kerala High Court: পুরুষদের তালাবন্ধ করে রাখুন, মহিলাদের মুক্ত হতে দিন: কেরল হাইকোর্ট
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 08, 2022 | 7:59 AM

কোঝিকোড়: যদি ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহিলা হোস্টেলে কারফিউ জারির উদ্দেশ্য হয়েথাকে, তাহলে পুরুষদেরই তালাবদ্ধ করে রাখা উচিত। বুধবার (৭ ডিসেম্বর), হস্টেলে কারফিউ জারির সরকারি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে, কোঝিকোড়ের মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ এমবিবিএস ছাত্রীর করা আবেদন বিবেচনা করার সময় এমনই পর্যবেক্ষণ করেছে কেরল হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবন রামচন্দ্রনের একক-বিচারপতির বেঞ্চ সাফ জানিয়েছে, মহিলা হোস্টেলে কারফিউ জারি করে কোনও উদ্দেশ্য পূরণ করা যাবে না। মহিলা শিক্ষার্থীদের অবিশ্বাস করে কিছুই অর্জন করা যাবে না। বিচারপতি রামচন্দ্রন বলেন, “পুরুষদের তালাবদ্ধ করে রাখুন। কারণ তারাই ঝামেলা করে। রাত ৮টার পর পুরুষদের জন্য কারফিউ জারি করুন। মহিলাদের বের হতে দিন।”

২০১৯ সালে কেরল সরকার, সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির হোস্টেলের ছাত্রীদের জন্য একটি বিশেষ সরকারি আদেশ জারি করেছিল। সেই আদেশে কোনও কারণ ছাড়াই রাত ৯.৩০টার পর হোস্টেলে ছাত্রীদের প্রবেশ এবং প্রস্থান নিশিদ্ধ করেছিল। সেই সঙ্গে ছাত্রীদের পড়াশোনা করার এবং স্টাডি হল ব্যবহার করার নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এই শর্তগুলি মানলে তবেই ছাত্রীরা হোস্টেল পেতে পারেন, এমন শর্ত আরোপ করা হয়। কেরল সরকারের এই আদেশকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ওই পাঁচ ছাত্রী। তাঁদের দাবি, কেরল ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস অ্যাক্টের ৪২ নম্বর ধারার অধীনে প্রদত্ত ক্ষমতার বাইরে গিয়ে এই নিষেধাজ্ঞাগুলি আরোপ করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, এটা সরকারের ‘নৈতিক পিতা হওয়ার প্রচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়’।

এই আবেদন শোনার সময়ই বিচারপতি রামচন্দ্রন মৌখিক পর্যবেক্ষণে বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের আর কতদিন আটকে রাখতে পারি? আপনারা মনে করছেন, কেরল বড় হয়নি এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা দরকার। সমাজ যদি এটাই চায়, তবে তাই হোক। তবে, এই সিদ্ধান্তগুলি ভিন্ন প্রজন্মের মানুষদের নেওয়া উচিত নয়। প্রবাদ আছে, প্রতিটি প্রজন্ম একটি নতুন দেশের মতো। নতুন প্রজন্মের উপর আইন চাপানোর কোনও অধিকার নেই আমাদের।”

বিচারপতি রামচন্দ্রন আরও বলেন, “কোভিডের সময় যখন সব কিছু বন্ধ ছিল, গার্হস্থ অপরাধ ছাড়া খুব বেশি অপরাধ ঘটেনি। সমস্ত হতাশা ঘরের মহিলাদের উপর পড়েছিল। সবসময়ই মহিলারাই আক্রমণের শিকার হন। আমি বুঝি, মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে। শহর খুলতে হবে, তবে তার আগে এটাকে নিরাপদ করে তুলুন। অন্তত ক্যাম্পাসগুলি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাজ্যের কর্তব্য। অভিভাবকরা ভয় পাচ্ছেন, মনে করছেন ৯.৩০-র তাদের বাচ্চাদের ছেড়ে দিলে, তারা নষ্ট হয়ে যাবে।”কোর্ট বলেছে .

আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, বিধিনিষেধ আরোপে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, তা অবশ্যই পুরুষ -মহিলা নির্বিশষে সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। বিচারপতি বলেন, “আমরা হোস্টেলের জন্য নিয়ম জারি করি, কিন্তু পুরুষদের জন্য তা শিথিল রাখি। এর থেকে এই ধারণা তৈরি হয় যে, মেয়েরাই সমস্ত উদ্বেগের কারণ। আমি এটাই বলতে চাইছি। আমি সরকারকে অভিযুক্ত করছি না, সরকার হল সমাজের প্রতিচ্ছবি। সব বাবা-মাই যখন চান তাদের মেয়েদের বন্দি করে রাখা হোক, তখন সরকার কীভাবে তা না বলতে পারে?” সমাজের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, “গত শতাব্দীতে তাদের (মেয়েদের) আটকে রেখে আমরা কী লাভ পেয়েছি?”