ভোপাল: এতদিন অজানা জ্বরে কাঁপছিল উত্তর প্রদেশ, এ বার মধ্য প্রদেশ(Madhya Pradesh)-ও একযোগে ডেঙ্গু (Dengue), নিউমোনিয়া (Pneumonia) ও ভাইরাল জ্বর (Viral Fever) হানা দিল। এবারও শিকার সেই শিশুরাই। একসঙ্গে প্রায় ১০০-১৫০ জন করে শিশু অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালেও থাকছে না তিল ধারণের জায়গা। গত এক মাসেই সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে শিশুদের জন্য শয্যার সংখ্যা ৫২৬ থেকে ১০৫০ করা হয়। এরপরও অধিকাংশ হাসপাতালের করিডরেই শিশুকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে অভিভাবকদের।
সরকারি সূত্রে বিগত এক মাসে শতাধিক শিশু অসুস্থ হয়েছে গোয়ালিয়রে। জ্বর, নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর। তবে চিন্তা বাড়াচ্ছে ক্রমবর্ধমান রোগীর সংখ্যাই। বর্তমানে জবলপুরের সরকারি হাসপাতালে ৭০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এদিকে শিশু বিভাগে বেডের সংখ্য়া মাত্র ৪০। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৭জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত, বাকি সকলেরই নিউমোনিয়া ও ভাইরাল জ্বরের উপসর্গ রয়েছে।
অন্য়দিকে, গোয়ালিয়রেও সরকারি হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক বিভাগে মাত্র ৫৬টি বেড রয়েছে, অথচ হাসপাতালে ভর্তি ১৩৩ জন শিশু। একই শয্য়ায় দু-তিনজন রোগী, নয়তো মাটিতে শুইয়ে রেখেই চিকিৎসা চলছে সেখানে। পার্শ্ববর্তী জেলা শিবপুরী ও দত্তা জেলা থেকেও বিপুল সংখ্য়ক রোগী আসায় ভিড় সামাল দিতেই নাজেহাল হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইন্দোর সহ একাধিক জেলাতেও পরিস্থিতি একই।
ভিন্দ, মোরেনা ও রাজগঢ়ে পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। মোরেনার একটি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ-র ১৩টি শয্যা থাকলেও রোগীর সংখ্যা ৪০। ওই ৪০ জন শিশুকেই কোনও মতে ১৩ শয্যার মধ্য়ে ভাগাভাগি করে রাখা হয়েছে। পেডিয়াট্রিক বিভাগেও ৩০ শয্যায় মোট ১০০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। আর স্থান দেওয়া সম্ভব না হওয়ায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও স্বাস্থ্য় অফিসার ডঃ মনীশ শর্মা জানান, অধিকাংশ রোগীরই উপসর্গ একই। জ্বর, পেট ব্যথা ও ফ্লুয়ের উপসর্গ। রোগীর সংখ্য়া বৃদ্ধি পাওয়ায় শীঘ্রই ১০০ শয্যার আরও একটি হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে।
মোরেনার স্বাস্থ্য় অধিকর্তা ডঃ এডি শর্মা জানান, শিশুদের মধ্য়ে দ্রুত ভাইরাল জ্বর ছড়িয়ে পড়ছে। একই শয্যায় ৩-৪ জন করে রোগীকে ভর্তি নিতে হয়েছে। বর্তমানে যারা গুরুতর অসুস্থ, কেবল তাদেরই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। আমরা অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করছি।
জন স্বাস্থ্য অভিযানের কনভেনার অমূল্য নিধি বলেন, “ভাইরাল জ্বরের রোগী সামাল দিতেই মধ্য প্রদেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। করোনা হলে তারা কী করবে যেখানে শিশুদের আইসোলেশনে রাখতে হবে এবং অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে। ছোট ছোট জেলাগুলিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। দ্রুত প্রতিটি হাসপাতালে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শয্যা ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা উচিত।”
এ দিকে, স্বাস্থ্য় আধিকারিকরা জানিয়েছেন, করোনার উপসর্গের উপরও কড়া নজর রাখা হচ্ছে। নিয়মিত শিশুদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এখনও অবধি কোনও রিপোর্টই পজেটিভ আসেনি।