মুম্বই: ভোর ছ’টায় মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিক(Nawab Malik)-র বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। টানা সাত ঘণ্টা জেরার পরই তাঁকে আর্থিক তছরুপ (Money Laundering) মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে দাউদ-যোগেরও প্রমাণ রয়েছে তদন্তকারী সংস্থার হাতে। আগামী ৩ মার্চ অবধি তাঁকে হেফাজতে রাখার নির্দেশই দিয়েছে বিশেষ আদালত। এদিকে, নবাব মালিকের গ্রেফতারির পরই বিরোধী দল বিজেপি(BJP)-র তরফে তাঁকে রাজ্যের মন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবি তোলা হয়েছে। তবে এনসিপি(NCP)-র তরফেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে মাথা নত করবেন না। নবাব মালিককে যে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী পদ থেকে সরানো হবে না, তাও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকালই নবাব মালিককে গ্রেফতারির পর বিশেষ আদালতের সামনে পেশ করা হলে, তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে জোর গলায় বলেন, “আমায় জোর করে আনা হয়েছে। ওনাদের আমায় আগে সমন পাঠানো উচিত ছিল। কিন্তু ওনারা সরাসরি আমার বাড়িতে হাজির হয়ে আমাকে তুলে এনেছেন”। ইডি অফিস থেকে মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার সময়ও নবাবের সেই অদমনীয় মনোভাবই দেখা যায়, তিনি সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশে বলেন, “আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব এবং জয়ীও হব। সকলের পর্দাফাঁস করব আমরা।”
এদিকে, এনসিপি নেতার গ্রেফতারির পরই বিজেপির তরফে তাঁর ইস্তফার দাবি তোলা হয়েছে। বিজেপি নেতা চন্দ্রকান্ত পাটিল বলেন, “নবাব মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওনার উচিত এখনই ইস্তফা দেওয়া। আমরা ওনার ইস্তফা চাই। যদি উনি ইস্তফা না দেন, তবে আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব। এনারা কীভাবে সরকার পরিচালন করছেন? মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের লম্বা তালিকা রয়েছে। আমরাও সেই তালিকা পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যাব।”
অন্যদিকে, বিজেপির সমালোচনার জবাবে রাজ্যের মন্ত্রী ছগন ভুজবল সাফ জানিয়ে দেন যে, নবাব মালিককে মন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, “বিগত ৩০ বছরে, মুম্বই বিস্ফোরণের সঙ্গে কেউ নবাব মালিকের নাম জড়ানননি। কিন্তু আজ তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন বলেই তাঁর মুখ বন্ধ করতে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আগামিকাল মন্ত্রালয়ের বাইরে গান্ধী মূর্তির সামনে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে।”
এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও জানিয়েছেন, নবাবের সম্মানহানি করতেই তাঁর সঙ্গে দাউদের নাম জড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “ওঁর বিরুদ্ধে কী মামলা করা হয়েছে, তা জানিনা। তবে যখনই কারোর নামে কালি ছেটানোর চেষ্টা করা হয়, প্রতিবারই দাউদের নাম টেনে আনা হয়।”